
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার খাগরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের আগের রাতে আগ্নেয়াস্ত্রসহ চারজনকে আটক করে বহিরাগত সন্দেহে গণধোলাই দেয় স্থানীয় জনতা। ওই চারজনের মধ্যে ছিলেন দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পার্থ সারথী চৌধুরী।
স্থানীয় জনতা আটকের পর মারধর করে অস্ত্রসহ পুলিশে সোপর্দ করেন। তবে ঘটনার সময় উদ্ধার হওয়া সেই আগ্নেয়াস্ত্রটিকে কেন্দ্র করে রহস্য দেখা দিয়েছে। অস্ত্রটির প্রশ্নে কোনোভাবেই মুখ খুলছে না পুলিশ।

সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার সময় এই বিষয়ে জানতে চাইলে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল বলেন, ‘আগ্নেয়াস্ত্রটির খবর পরে জানা যাবে। এখনও মাঠে দৌঁড়া দৌঁড়িতে আছি।’ একথা বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
এর আগে রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে খাগরিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মাইজপাড়ায় একটি প্রাইভেটকার ও সিএনজি অটোরিকশায় ৪ বহিরাগতকে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয় জনতার। পরে তাদের আটক করে গণধোলাই দেয়। এসময় যুবলীগ নেতা পার্থ সারথীর কাছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যায়।
জানা গেছে, পার্থ সারথী চৌধুরীর বাড়ি সাতকানিয়া থানার চরতি ইউনিয়নে। তবে ভোটের আগের রাতে তিনি ছিলেন খাগরিয়ায়। এই ঘটনায় আহত হয়ে বর্তমানে তিনি নগরীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, ভোটের আগের রাতে এলাকায় বহিরাগত দেখে জনতার মাঝে নানা প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে তাদের আটক করে বেধড়ক মারধর করে। এসময় যুবলীগ নেতার কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যায়। পরে তা জানতে পেরে উদ্ধারে এগিয়ে আসে খাগরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সতন্ত্র প্রার্থী জসিম উদ্দিন।
জসিম উদ্দিন জানান, স্থানীয়রা বহিরাগত সন্ত্রাসী মনে করে চারজনকে মারধর করেছে। তাদের আমি উদ্ধার করতে যাই। গিয়ে দেখি সেখানে পার্থ সারথী চৌধুরী রয়েছে। আমি তাকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আসি। এরপর বিষয়টি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন সাহেবকে অবহিত করি। উনি আমার বাড়িতে এসেছেন। পরে তাদেরকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ছবিতে দেখা যায়, একটি কক্ষে পুলিশের সামনে বসে আছেন পার্থ সারথী চৌধুরী। পাশে টেবিলের ওপর রয়েছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র।
কিন্তু সেই আগ্নেয়াস্ত্রটি সেখানে কীভাবে এলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার সময় অস্ত্রটি যুবলীগ নেতার কাছে পাওয়া যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে স্বতন্ত্র প্রার্থী জসিম উদ্দিন নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে থেকেই তাদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
তবে এই বিষয়ে কথা হয় সাতকানিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা সুজন কুমার দে’র সাথে। তিনি আগ্নেয়াস্ত্রসহ কিছু মানুষ পাওয়া গেছে বলে ঘটনাটি স্বীকার করলেও পরে যুবলীগ নেতা পার্থ সারথী চৌধুরীর সম্পৃক্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পার্থ সারথী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার সাথে কোনো অস্ত্রের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান বলেন, ‘দৌঁড়ের মধ্যে আছি ভাই, আমি পরে কথা বলব..।
ছবি ও নিউজ- মহানগর নিউজ ডটকমের সৌজন্যে।