
কক্সবাজারের টেকনাফে আত্মসমর্পণ করা ১০১ ইয়াবা কারবারিকে মাদক মামলায় দেড় বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
দণ্ডিত আসামীদের মধ্যে টেকনাফের সাবেকআলোচিত এমপি আব্দুর রহমান বদির ৪ ভাই রয়েছে।
এ ছাড়া রায়ে অস্ত্র মামলা থেকে তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরের দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত ১৭ জন। বাকি ৮৪ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সাক্ষ্য-প্রমাণে প্রমাণিত না হওয়ায় ওই সময় দায়ের করা অস্ত্র মামলা থেকে আসামিদের খালাস দেওয়া হয়েছে।
আদালতের বরাতে পিপি বলেন, ‘আদালত অবজারভেশনে বলেছেন আগামী দিনে যাতে কেউ এ পেশায় না ফেরে সে জন্য এ রায় ভূমিকা রাখবে।’
এর আগে, সকাল ১১টার দিকে আদালতে আনা হয় কারাগারে থাকা ১৭ আসামিকে। বাকিরা পলাতক ছিলেন। বেলা সাড়ে ১২টা রায় পড়া শুরু হয়।
নথি পর্যালোচনায় আদালত বলেন, ‘২০১৯ সালেই ৩৭ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী বন্ধুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সাড়ে তিন লাখ ইয়াবা এবং ৩০টি অস্ত্র উদ্ধার হয়। আত্মসমর্পণকারী আসামিরা উদ্ধার আলামত তাদের বলে স্বীকার করেন। অস্ত্র মামলায় ৩৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।’
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে আছেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির চার ভাই (আব্দুল আমিন, আব্দুর শুক্কুর, শফিকুল ইসলাম, ফয়সাল রহমান), ভাগনে সাহেদ রহমান নিপু, চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলম।
আরও আছেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ এবং তার বড় ভাই আব্দুর রহমান, বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমেদের ছেলে দিদার মিয়া, টেকনাফ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল বশর নুরশাদ, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের এনামুল হক এনাম মেম্বারসহ অনেকে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ পাইলট হাইস্কুল মাঠে ১০২ জন ইয়াবাকারবারী আত্মসমর্পণ করে। মামলা চলাকালে সোহেল নামে এক আসামি কারাগারে মারা গেছেন। আত্মসমর্পণের পর তাদের কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ৩০টি দেশি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আত্মসমর্পণকারী আসামিদের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে তৎকালীন ওসি (তদন্ত) এবিএমএস দোহা বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ এবং আসামিদের পক্ষে সাক্ষীদের জেরা করা হয়। আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষা ফলাফল যাচাই, আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থণের সুযোগ দেওয়াসহ মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে।