
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের আনা বিপুল পরিমাণ গার্মেন্টস ফ্রেব্রিক্স জব্দ করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। যার বাজার মূল্য ১১ কোটি ৪৪ লাখ ৭২ হাজার টাকা।খোলা বাজারে বিক্রির লক্ষ্যে গোল্ডটেক্স গার্মেন্টসের আরও চারটি চালানে ১০৮ দশমিক ৪৭ টন ফেব্রিক্স পাওয়া গেছে। যার শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ৩ কোটি ৮১ লাখ টাকার বেশি।
আজ বুধবার (৪ জানুয়ারি) কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. বশীর আহমেদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কাস্টমস সূত্রে জানাগেছে, গত বছরের ১৩ অক্টোবর নগরীর উত্তর হালিশহরে স্পীডওয়ে লজিস্টিকসের ভাড়া গুদামে অভিযান চালিয়ে ঢাকার সাভারের ডিইপিজেডের গোল্ডটেক্স গার্মেন্টস লিমিটেডের আমদানি করা ১০৭ দশমিক ২৬ টন ফেব্রিক্স আটক করা হয়। যার বাজার মূল্য ছিল ১০ কোটি টাকা। এ ঘটনায় সিএন্ডএফ এজেন্ট স্প্রীডওয়ে লজিস্টিকের মালিক মো. খসরুল আলম আকনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নগরীর হালিশহর থানায় ফৌজদারি মামলাসহ চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেটে মামলা করা হয়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় একই আমদানিকারকের খালাসের অপেক্ষায় থাকা আরও চারটি চালান চট্টগ্রাম বন্দরে চিহ্নিত করা হয়। চার কনটেইনারের চালানগুলো কাস্টম হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) কর্মকর্তা ও বন্দর প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ফোর্স কিপডাউন করে কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়।

এ চালান গুলোর তিনটি বিএলের শিপিং এজেন্ট এমসিসি ট্রান্সপোর্ট (মার্কস বাংলাদেশ লিমিটেড) এবং একটি বিএলের শিপিং এজেন্ট ইউরোম্যাক্স লজিস্টিকস লিমিটেড।
মহাপরিচালক মো. বশীর আহমেদ জানান, তদন্তকালে দেখা গেছে প্রাপ্ত সব দলিলাদি আমদানিকার গোল্ডটেক্স গার্মেন্টস লিমিটেডের নামে ইস্যু হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির আবেদনের প্রেক্ষিতে বেপজা কর্মকর্তাদের যাচাই-বাছাইপূর্বক আইপি ইস্যু করা হয়। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চিঠি দিয়ে কাঁচামাল আমদানির বিষয়টি অস্বীকার করলেও বেপজা থেকে আইপি গ্রহণসহ আমদানি দলিলাদির আলোকে বিষয়টি স্পষ্ট যে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান গোল্ডটেক্স গার্মেন্টস লিমিটেড এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা পরস্পর যোগসাজশে বন্ড সুবিধায় শুল্ককর ফাঁকি দিয়ে পণ্যচালানগুলো খালাস নেওয়ার অপচেষ্টা করেছেন। বন্ড লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের বা ব্যক্তি বন্ড সুবিধায় আনা পণ্যের অবৈধ মজুদ, সরবরাহ ও খোলা বাজারে বিক্রি বা বিক্রির চেষ্টা চোরাচালান বলে গণ্য। এসব পণ্য চোরাই পথে খোলাবাজারে বিক্রির চেষ্টা রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। যা দ্য কাস্টমস অ্যাক্ট ১৯৬৯ অনুযায়ী একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ বিষয়ে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে কাস্টম হাউসে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিএলগুলোর বিপরীতে কোনো বৈধ এলসি বা সেলস কনট্রাক্টের মাধ্যমে ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানো না হওয়ায় অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ অনুযাযী মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।