
চট্টগ্রাম মহানগরীর চাঁন্দগাও এলাকায় কোচিং সেন্টারে পড়তে গিয়ে শিক্ষকের ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ দিন সোমবার (২৬ফেব্রুয়ারী) ওই ছাত্রী মারা যায়।
মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষক এইচ এম জিসান প্রকাশ হামিদ মোস্তফা জিসান (২১) কে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃত ধর্ষণকারী মোস্তফা জিসান কক্সবাজারের মহেশখালীর পশ্চিম পাড়ার বাবুল মিয়ার পুত্র। তিনি ইসলামী ছাত্রসেনা নামে একটি ছাত্র সংগঠনের ইউনিয়ন সভাপতি।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চাঁন্দগাও এলাকায় “শিক্ষাশালা কোচিং সেন্টার” এ পড়তেন এনএমসি স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী সেই শিক্ষার্থী। এক পর্যায়ে কোচিং সেন্টারে শিক্ষক হামিদ মোস্তফা জিসানের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পরে সে। এ সময় নানা ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর কোচিং সেন্টারের ভেতরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় আপত্তিকর অবস্থায় ছবিও ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে তার সাথে কয়েক দফায় শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা হয়। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থী অসুস্থবোধ করলে তাকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা অন্তঃসত্ত্বা বলে জানান।
বিষয়টি পরিবারে জানাজানি হলে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালবাসা দিবসে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্নহত্যার চেষ্টা চালায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। পরদিন তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। এর প্রায় ১২ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার সকালে মৃত্যু হয়।
এদিকে শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করার পর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি চান্দগাঁও থানায় শিক্ষক জিসানের বিরুদ্ধে মামলা করে ওই ছাত্রীর বাবা। পুলিশ ইতোমধ্যে উক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মামা বলেন, ‘আমরা এই ঘটনায় দোষী ব্যক্তির শাস্তি চাই। মা-বাবার পরই শিক্ষকের স্থান। এখন শিক্ষার্থীরা যদি শিক্ষকের কাছে নিরাপদ না থাকে তবে আমরা কোথায় যাব?’
পুলিশের উত্তর বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার পংকজ দত্ত জানান, ‘আমরা ইতোমধ্যে মামলা নিয়েছি এবং একমাত্র আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও অভিযুক্ত এখনও কোন কিছু স্বীকার করেনি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে আমরা আরও নিশ্চিত হবো।’