পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এম্বেসেডরস আউট রিচ প্রোগ্রামের আওতায় ২৪টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মিশন প্রধানসহ ৩৪ জন কূটনৈতিক সদস্যদের নিয়ে চট্টগ্রামের ট্রেনযোগে কক্সবাজার রওনা হয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
এর আগে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব টানেল সহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন এসব বিদেশী কূটনৈতিক সদস্যরা।
আজ মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজার যাবার প্রাক্কালে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন বিদেশি কূটনীতিকরা যাতে দেশ ও দেশের অগ্রগতি সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে পারেন সেজন্যই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আউটরিচ প্রোগ্রামের আয়োজন করেছে।
তিনি বলেন, কূটনীতিকদের এই পরিদর্শনের মাধ্যমে বাঙালি জাতির সামর্থ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেই উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চলছে তাতে আমাদের দেশকে তারা ভালোভাবে জানতে পারছে। বাংলাদেশকে জানার মাধ্যমে তারা তাদের দেশকে এই বার্তা পৌঁছে দেবে। এবং বাংলাদেশের এই খবরগুলো তারা বিশ্বময় ছড়িয়ে দেবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা যেন আমাদের দেশকে জানে, দেশে যে বিরাট উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ হচ্ছে সেগুলো যেন তারা স্বচক্ষে দেখে, সেই কারণেই তাদেরকে চট্টগ্রামে আনা হয়েছে। এবং চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনযোগে তারা কক্সবাজার যাবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এম্বাসেডরস আউটরিচ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে এই সফরের আয়োজন, এবং এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি উদ্যোগ।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত ট্রেন লাইন হয়েছিল ১৯৩০ সালে। কিন্তু তার অনেক আগেই চট্টগ্রাম থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ট্রেন লাইনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে। অর্থাৎ ১৯০০ সালের পরপরই সেটির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু দেশ বিভাগ হল, দেশ বিভাগের পর বাংলাদেশ হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও পরিকল্পনা করেছিলেন, কিন্তু তিনিও বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। কারণ তাকে সাড়ে তিন বছরের মাথায় হত্যা করা হয়েছিল। বরং তিনি বিধ্বস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভাবে পুনর্গঠন করার আগেই তাকে হত্যা করা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই জনপদের মানুষ যেই স্বপ্ন ১২৫ বছর আগে দেখেছিল, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নেতৃতে। এটি একটি অসাধারণ কাজ। তাই আজকে আমরা কূটনীতিকদেরকে চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে করে কক্সবাজার নিয়ে যাচ্ছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেও চট্টগ্রাম থেকে প্রথম ট্রেনে করে কক্সবাজার যাচ্ছেন উল্লেখ করে বলেন, তাদেরকে আনার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তারা যেন বাংলাদেশকে জানে এবং চিনে, আমাদের দেশে যে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত, এই সমুদ্র সৈকতের খবরটা যেন তাদের মাধ্যমে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে। এবং বাংলাদেশের সৌন্দর্য ও উন্নয়ন সম্পর্কে তারা যেন ভালো করে জানতে পারে, সেজন্যই তাদেরকে আমরা নিয়ে এসেছি।
বিদেশী প্রতিনিধিদের সাথে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে কোন কথাবার্তা হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের সাথে তো কথাবার্তা আমাদের সবসময়ই হয়, এবং তারা অনেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গেছে। এবং এখনো যদি তারা সুযোগ পায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাবে।
উল্লেখ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, চীন, কোরিয়া, ইতালি, ডেনমার্ক, কসভো, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, শ্রীলংকা, ভিয়েতনাম, ভ্যাটিকান, ভুটান, স্পেন, আর্জেন্টিনা, লিবিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মিশর, ফ্রান্স এবং এফএও, আইইউটি, একেডিএন আন্তুর্জাতিক সংস্থাগুলোর ২৪ জন মিশন প্রধানসহ ৩৪ জন কূটনৈতিক সদস্য এই আউটরিচ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। তারা সকালে কর্ণফুলি নদী তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল পরিদর্শন করেন। এসময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
