চলতি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে আসায় বাড়তি দরে ডলার কিনছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। কোনো কোনো ব্যাংক প্রতি ডলারে দিচ্ছে ১১৯ টাকা ৪০ পয়সা পর্যন্ত। বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে এমন অস্থিরতা, আর্থিক হিসাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
গত কয়েকবছর ধরেই ডলার সংকটে ভুগছে দেশের অর্থনীতি। সংকট কাটাতে বিদেশি মুদ্রার প্রবাহ বাড়াতে নেয়া হয় নানামুখী উদ্যোগ। দিনশেষে যা থেকে সুফল মিলেনি খুব একটা। এমন অবস্থায় সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধের সিদ্ধান্ত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, গত সপ্তাহে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে মাত্র ১৩ কোটি ডলার। অথচ সংখ্যাটা ৫০ কোটির ওপরে ছিল চলতি মাসের প্রতি সপ্তাহেই। জুলাইয়ের ২৭ তারিখ পর্যন্তও সংখ্যাটা খুব একটা সুখের না, মাত্র ১৫৬ কোটি ডলার। রেমিট্যান্সের নেতিবাচক এই প্রবাহে চিন্তিত ব্যাংকের কর্মকর্তারাও। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে বাড়তি দরে ডলার কিনছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। মানা হচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রলিং পদ্ধতি।
রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আবু নাসের মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, ঘটনা ঘটলে এর তো কিছু একটা ইমপ্যাক্ট আছেই। এটি হয়তো সময়ের সাথে সাথে ঠিক হয়ে যাবে। প্রবাসীদের আয় কিছুটা কমে গেছে। প্রবাসীদের প্রপার চ্যানেলে টাকা পাঠাতে বলা হচ্ছে কিন্তু আমরা এখনও পাইনি।
চলমান অস্থিরতায় বৈধ চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স না পাঠাতে প্রচারণায় একটি পক্ষ। যার সুযোগ নিচ্ছেন হুন্ডি ব্যবসায়ীরা। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যথাযথ উদ্যোগের অভাবকেই দুষছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এর জন্য দায়ী। এখানে রাজনৈতিক অবস্থা খারাপ আর বাহিরে এর প্রোপাগান্ডা হচ্ছে। এই দুটিরই প্রভাব পড়েছে। নেতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকলে তো শুধু কারেন্ট অ্যাকাউন্ট নয় ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট সব ধরণের ব্যালেন্সে প্রভাব পড়বেই।
পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বর্তমানে এক্সচেঞ্জ রেটের ভিত্তিটা কেঁপে গেছে। আমি এটিকে ভেঙে বা নড়বড়ে হয়ে গেছে বলবো না। এটিকে যদি এখন স্থিতিশীল করতে না পারি তাহলে মুদ্রাস্ফীতি আবার আউট অব কন্ট্রলে চলে যাবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে খরচ যোগ্য রিজার্ভ রয়েছে ১৫ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার।