জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে জনতার উপর হামলা ও হত্যা চেষ্টা মামলার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের সাবেক সহ-সভাপতি জাবেদ আবছার চৌধুরীকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) খুলশী থানা পুলিশ।
৪ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরীর জাকির হোসেন রোডস্থ চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের একটি কক্ষ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার খুলশী থানার মামলা নং ০৯ ( ২৬/৮/২৪) মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
আদালতে থাকা একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে জামিনের আবেদন নাকজ করে জাবেদ আবছার চৌধুরীকে কারাগারে পাঠিয়েছে চট্টগ্রামের একটি আদালত।
জাবেদ আবছার চৌধুরীর গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলশী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মজিবুর রহমান। তিনি জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও হত্যা চেষ্টা মামলায় অজ্ঞাতনামা সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে জাবেদ আবছার চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
খুলশী থানা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বছর (২০২৪) ২০ জুলাই বিকাল ৪টার দিকে খুলশী থানাধীন গরীবুল্লাহ শাহ্ হাউজিং সোসাইটির গেইটের সামনে রাস্তার উপর বৈষম্য বিরোধী চাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া জাতীয়বাদী স্বেচ্ছাসেবক দল খুলশী থানার শাখার আহ্বায়ক মো. আলম রায়হান আলমের উপর দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা চালায় দুস্কৃতকারীরা।
আলম রায়হান আরও জানান, এজহারে উল্লেখিত ১-১০ নং আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জন দুস্কৃতকারী আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময়ে ২ ও ৩ নং আসামি তাদের হাতে থাকা অগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ফাঁকা গুলি করে এলাকায় ত্রাস ও আতংক সৃষ্টি করে। তিনি আরও জানান, আমাকে মারধরের একপর্যায়ে আসামিরা আমাকে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে আমার হাত, মুখ, চোখ, কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং আমাকে অপহরণ করে আজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়। অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে সেখানেও আমাকে প্রচুর মারধর করে আমাকে ফেলে চলে যায়।
খুলশী থানা পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত জাবেদ আবছার চৌধুরী আওয়ামী সমর্থিত বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সহ সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক চর্চা ও শিশু-কিশোর সংগঠনের উপদেষ্টা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের বন্ধ কক্ষে প্রায় সময় মাদকসহ নারী নিয়ে আড্ডা দেন জাবেদ আবছার চৌধুরী ও ডায়াবেটিক হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট জাহাঙ্গীর আলম। মঙ্গলবার বিকালে বন্ধ কক্ষে আড্ডা দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে খুলশী থানা পুলিশকে খবর দেয় হাসপাতালের কর্মচারীরা।
২৬ আগস্ট খুলশী থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রায়হান আলম বাদী হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধরের অভিযোগ করা মামলার অন্য আসামিরা হলেন, ১. মো. দিদার (৫৫), পিতা, মৃত জরিব আলী, ২. কাউছার উজ জামান (৫৬), পিতা, অজ্ঞাত, ৩. কাজী হারুনুর রশিদ (৫২), পিতা, মৃত কাজী আফাজ উদ্দিন, ৪.সমির বাবু (৪৫), পিতা, সাধন বাবু, ৫. মো. বাবুল (৪৪), পিতা-অজ্ঞাত, ৬. মো. আলম যে সি.সি.এল আলম (৫০), পিতা- অজ্ঞাত, ৭. মো. জানা উল্লাহ (৫০), পিতা-অজ্ঞাত, ৮. মো. এনায়েত উল্লাহ ও টেক্সবার এনায়েত (৫২), পিতা-অজ্ঞাত, ৯. রবিউল হোসেন বাবু (৩৫), পিতা মৃত সুলতান আহমেদ, ১০. মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪৫), পিতা হাজী নুরুল হক এবং অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জন।