
গুলশান-২ এ যে বাড়িতে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ থাকতেন, সেটি থেকে তাকে উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক। বুধবার (৭ জুন) দুপুরের পর থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওয়ালিউর রহমানের নেতৃত্বে বাড়িটিতে অভিযান চালায় সংস্থাটি।
রাজউকের অঞ্চল-৪ এর অথরাইজড অফিসার আদিলুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আদালতের রায় অনুযায়ী দুপুরের পর থেকে আমরা ওই বাড়িটিতে অভিযান শুরু করি। এরই মধ্যে বাসার পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার মওদুদ আহমেদ বাড়িটির অবৈধ দখলদার বলে রায় দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
ওই রায় ঘোষণার পর ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছিলেন, ‘এটা সরকারের বাড়ি নয়। আমাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তি। আমরা আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করবো’।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ রায় প্রকাশ করা হয়। রায়ে ৩০ দিনের মধ্যে মওদুদ আহমেদকে রিভিউ আবেদন করতে বলা হয়েছে।
২০১০ সালের ১২ আগস্ট ওই বাড়িটি মনজুর আহমদের নামে নামজারি করার জন্য হাইকোর্ট রায় দেন। রাজউক এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করে ২০১১ সালের ০৩ ফেব্রুয়ারি। ২০১৪ সালের ০৯ মার্চ আপিল বিভাগ রাজউককে আপিলের অনুমতি দেন। এরপর চলতি বছর এ মামলার শুনানি শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন।
আদালত সূত্র জানায়, গুলশানে বসবাসরত মওদুদ আহমদের বাড়ির প্রকৃত মালিক ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসান। এক পর্যায়ে বাড়িটির মালিকানার কাগজপত্রে এহসানের স্ত্রীরও নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা বাংলাদেশ ত্যাগ করলে ১৯৭২ সালে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়। ১৯৭৩ সালের ২ আগস্ট মওদুদ তার ইংল্যান্ডপ্রবাসী ভাই মনজুরের নামে একটি ভুয়া আমমোক্তারনামা তৈরি করে বাড়িটি সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ নেন।’
এমন অভিযোগ করে দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর রশিদ ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর অবৈধভাবে বাড়ি দখল ও আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় মওদুদ ও তার ভাই মনজুরের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
তবে মওদুদ আহমদের পক্ষে দাবি করা হয়, ‘বাড়িটি সরকারি সম্পত্তি নয়, ব্যক্তিগত সম্পত্তি। আর মওদুদ আহমদের ভাই ব্যক্তি মালিকের কাছ থেকেই বাড়িটি ক্রয় করেছেন।’