
সিটি কর্পোরেশনকে দলীয়করণ ও দুর্নীতিমুক্ত রেখে দায়িত্ব পালন করছেন জানিয়ে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, যদি দলীয়করণ ও দুর্নীতি করতে হয় তাহলে হাসিমুখে মেয়র পদ থেকে বিদায় নেব। আমি পাওয়ার জন্য আসিনি, দেওয়ার জন্য এসেছি। জীবন দিয়ে হলেও নগরবাসীর জন্য কাজ করতে দ্বিধা করব না।
আজ ৩১ জুলাই বিকেলে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সুধী সমাবেশে মেয়র এসব কথা বলেন। সিটি কর্পোরেশনের ২০১৬-১৭ অর্থবছরের উন্নয়ন কার্যক্রম অবহিতকরণের লক্ষ্যে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন সময়সাপেক্ষ বিষয়। এটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। তিনি বলেন, কে খাল দখল করেছে আমার বলার দরকার নেই। উনি তো জানেন। স্ব ইচ্ছায় সরে দাঁড়াতে পারেন। আরএসের ভিত্তিতে ডিজিটাল জরিপ করা হচ্ছে। কিছুটা সময় লাগবে। উচ্ছেদের সময় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ সময় স্মার্টফোনের আইকন ছুঁয়ে সিটি করপোরেশনের সেবা সম্পর্কিত অ্যাপস উদ্বোধন করেন মেয়র।
সরকার চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা লাঘবে আন্তরিক এবং এ লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণিত হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, কিছুটা সময় দিন জলাবদ্ধতা নিরসন সহ কাংখিত সকল উন্নয়ন নির্দ্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে।

মেয়র বলেন, সুধি সমাজের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে তাদের পরামর্শ মতে আইনী কাঠামোর মধ্যে থেকে সচেতনতার সাথে নাগরিক প্রত্যাশা পুরনের চেষ্টা করছি। নগরবাসীকে দেয়া প্রতিটি ওয়াদা ৫ বছর মেয়াদের মধ্যে পুরন করব।
এ লক্ষ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রসঙ্গক্রমে মেয়র বলেন, বিগত ২০ বছরের তুলনায় সকল প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্যে আনা সম্ভব হয়েছে।
বর্তমানে উন্নয়ন কার্যক্রমে কেন ধরনের অব্যবস্থাপনা ও দূর্ণীতি নেই। উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারগণ স্বাধীনভাবে অনলাইনে আবেদন করতে পারছে। মেয়র বলেন, নগরবাসীর নিকট থেকে যে সকল খাতে পৌরকর গ্রহণ করা হয় তাদের প্রতিটি পয়সার ব্যয় সঠিকভাবে করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশের স্বার্থে পরিচ্ছন্ন কাজের আমুল পরিবর্তন করা হয়েছে। নির্দ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নগরীকে এলইডি লাইটিং এর আওতায় এনে নগরীকে শতভাগ আলোকিত করা হবে। নগরীর অলি-গলি, রাজপথ শতভাগ কার্পেটিং করা হবে। মেয়াদ শেষে পাই টু পাই ওয়াদা বুঝে নেয়ার জন্য নগরবাসীকে আহবান জানান।
জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতার ক্ষেত্রে নগরবাসী বা অন্য কারোর সংশ্লিষ্টতা থাকলে তা নিরসন করতে হবে। তবে প্রকৃতির সাথে সম্পৃক্ত জলাবদ্ধতা নিরসন করা অনেকাংশে কঠিন ও দীর্ঘমেয়াদী।
তিনি বলেন, ১৯৯৫ সনের ড্রেনেজ মাষ্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন না হওয়ার কারনে নাগরিক দূর্ভোগ চরম আকার ধারন করছে। তিনি আশা করেন, সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় ও সমন্বয়ের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন সহ সকল সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে।
তিনি ফ্লাইওভারের পিলার দ্বারা বহদ্দারহাট ও রেল ষ্টেশন এলাকায় নালা বন্ধ করে দেয়ার কারনে জলাবদ্ধতা আশংকাজনকভাবে বেড়ে গেছে। সমন্বয়হীনতা ও অপরিকল্পিত কর্মকান্ডের কারনে নাগরিক দূর্ভোগ বেড়েই যাচ্ছে।
মেয়র বলেন, আমার বিশ্বাস চট্টগ্রাম একটি গুরুতপূর্ণ নগরী। যেকোন মানদন্ডে দেশের এক নম্বর নগরী। কারণ চট্টগ্রাম বন্দর সহ এ এলাকাটি অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র। বিশ্বমানের আধুনিক নগর, মেগাসিটির পরিকল্পনা মাথায় রেখে এ নগরীকে গ্রিন ও ক্লিন সিটির ভিশন নিয়ে সেবা করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, বিগত দুই বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে আগামী ৩ বছরের কর্মপরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। তিন অর্থ বছরের মধ্যে দেয়া অঙ্গিকার একে একে বাস্তবায়ন করা হবে।
সুধি সমাবেশে সিটি মেয়রের বিগত দুই বছরের কার্যক্রমের উপর আলোচনা করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সদস্য, মিসেস সাবিহা মুসা, সংসদ সদস্য মিসেস ওয়াসিকা আয়েশা খানম, দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি আলহাজ্ব মাহবুবুল আলম, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দি চিটাগং টিভি জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি আলী আব্বাস ।