মিয়ানমার সরকারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ঠুর নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে প্রাণ ভয়ে বাংলাদেশ সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থানরত ছুটে আসা হাজারো অসহায় রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও পুরুষের মাঝে বিভিন্ন ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেছে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন (বিএইচআরএফ)।
গত ৩ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুরে বিএইচআরএফ এর চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সভাপতি এডভোকেট এএম জিয়া হাবীব আহসানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি টিম পার্বত্য জেলা বান্দরবান এর নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের সাঁপমারা ঝিরিস্থ জিরো পয়েন্টে কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে সরাসরি এ ত্রান বিতরণে অংশ নেন।
বিতরণকৃত ত্রানের মধ্যে ছিল নারী, পুরুষের কাপড় চোপড় ও কিছু নগদ টাকা এবং চিকিৎসা সেবা প্রভৃতি।
ঈদের পরদিনই এসব ভাগ্য বিড়ম্বিত, অসহায় কতিপয় হতাশাগ্রস্থ রোহিঙ্গারা ত্রান পেয়ে কিছুটা স্বস্তি পায় । বিএইচআরএফ টিম প্রসূতি সহ বেশ কিছু গুরুতর, আহত, অসুস্থ শরনার্থীকে চিকিৎসা সেবা দেয়।
সরেজমিনে ঘুরে এসে মানবাধিকার নেতৃবৃন্দ বলেন, মায়ানমার রাষ্ট্রশক্তি কর্তৃক যুগে যুগে অবহেলিত পৃথিবীর সবচেয়ে নিগৃহীত ধর্মীয় জাতি গোষ্ঠী রোহিঙ্গারা নিজ দেশে পরবাসী । কেউ মনের খুশিতে এক কাপড়ে গৃহ ত্যাগ কিংবা দেশত্যাগ করে না । তারা নিরাপত্তা পেলে নিজ দেশে ফিরে যাবে । প্রতিদিন বানের স্রোতের মতো নির্যাতিতরা বাংলাদেশ সীমান্তে আসছে । তারা বাধ্য হয়ে ভিটে মাটি ছেড়ে দুর্গম পাহাড়ী পথে জিরো পয়েন্টে আশ্রয় নিয়েছে। তারা চরম দুর্দশা গ্রস্থ । নিরাপদে দেশে ফিরতে চায় কিন্তু স্বজনহারা এসব নারী শিশু অসহায় মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া যায় না। এক সময় রোহিঙ্গাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার ছিল।
পরিকল্পিতভাবে একটি জাতি গোষ্ঠীকে নির্মূল করার জন্য মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও তাদের প্রেতাত্মারা ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করে চলেছে। ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের শরনার্থীদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র সমূহ যেভাবে আশ্রয় দিয়েছে তাদের সেভাবে আশ্রয়ও মানবিক সহায়তা দেয়া উচিত এবং তাদেরকে জনসংখ্যার ভারে জর্জরিত বাংলাদেশ থেকে ৩য় কোন রাষ্ট্রে স্থানান্তরের জন্য জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের আশু দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় ।
বিএইচআরএফ নেতৃবৃন্দ এ মানবিক সংকটের স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ববাসীকে উদাত্ত আহবান জানান। কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষ্যে ত্রাণ বিতরণকালে এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাক্তার মোঃ নুরুল আমিন চৌধুরী (কার্ডিওলিজষ্ট), মানবাধিকার কর্মী শহীদুল ইসলাম বাবর, বিএইচআরএফ ডবলমুড়িং শাখা সেক্রেটারী মোহাম্মদ এরশাদ আলম, মানবাধিকার কর্মী আজিজুল হক, জিয়াউল হক ও সাংবাদিক আবুল বশর নয়ন ।
