
প্রথম বারের মত চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের নির্বাচন আজ ২৪ সেপ্টেম্বর রবিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাবেক পটিয়া উপজেলার ৫ ইউনিয়ন শিকলবাহা, বড়উঠান, চরলক্ষ্যা, চরপাথরঘাটা ও জুলধা ইউনিয়নকে বিভক্ত করে নতুন এ উপজেলা ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ইসলামীক ফ্রন্ট ও ইসলামী ফ্রন্টের পক্ষ থেকে পৃথকভাবে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারুক চৌধুরী, বিএনপির ধানের শীর্ষের চেয়ারম্যান প্রার্থী এডভোকেট এসএম ফোরকান, ইসলামিক ফ্রন্টের চেয়ার প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির রিজভী।
চট্টগ্রামের নবগঠিত উপজেলা কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচন আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উপজেলা ঘোষণা হওয়ার পর প্রথম নির্বাচন ইতিমধ্যে আলোচনায় এসেছে বেশ কয়েকবার। বিশেষ করে তফশিল ঘোষনার পর প্রথবার নির্বাচন পিছানো এবং দ্বিতীয়বার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারন দেখিয়ে বিগত ২০ আগস্টের নির্বাচনের ৭২ ঘন্টা আগে নির্বাচন স্থগিত করা।
চট্টগ্রাম মহানগরীর পাশেই অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে পরিচিত কর্ণফুলী উপজেলার প্রথম নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে ভোটারদের মধ্যে। প্রথম বারের মতো কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে দলীয় প্রতীকে হওয়াতে। যেখানে জাতীয় রাজনীতি দলীয় প্রতীককে বড় ফ্যাক্টর মানছেন অনেকে।
সব জল্পনা কল্পনা শেষ করে কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচনে কারা বিজয়ী হয়ে আসছেন দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২৪ সেপ্টেম্বর ভোটের ফলাফল ঘোষনা পর্যন্ত। ফলাফল ঘোষনার পর জানা যাবে কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের তিন জনের অনার বোর্ডে শীর্ষ তালিকায় কারা থাকবেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে. কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাচনে মোট ভোটার প্রায় ১ লাখ ৭ হাজার ৭৯৯ ভোট। তদ্মধ্যে পুরুষ ৫৩ হাজার ৫৯৯ এবং মহিলা ৫৪ হাজার ২০০ ভোট। ভোট কেন্দ্র ৪০টি। ৩ পদেই দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন। তিন পদেই দলীয় প্রতীকে আলাদা ব্যালট পেপারে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের ফারুক চৌধুরী নৌকা প্রতীকে, বিএনপির এসএম ফোরকান ধানের শীষ প্রতীকে ও ইসলামিক ফ্রন্টের জাহাঙ্গীর কবির রিজভী চেয়ার প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের দিদারুল ইসলাম চৌধুরী নৌকা প্রতীকে, বিএনপির হাজী মুহাম্মদ ওসমান ধানের শীষ প্রতীকে, ইসলামী ফ্রন্টের মাওলানা মুছা মোমবাতি প্রতীক নিয়ে ও ইসলামিক ফ্যন্টের নাছির আহমদ চেয়ারম্যান নিয়ে লড়ছেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের বানাজা বেগম নৌকা প্রতীকে, বিএনপির উম্মে শামীমা মিরজান ধানের শীষ প্রতীকে ও জাতীয় পার্টির মুন্নি বেগম লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বদ্বীতা করছেন। ইতিমধ্যে প্রচার প্রচারণা শেষ করেছে প্রার্থীরা।
শুক্রবার রাত ১২টায় প্রার্থীদের প্রচারণা শেষ হয়েছে। কর্ণফুলী উপজেলার প্রথম নির্বাচনে ভোটারদের সমর্থন কোন দিকে যায় সেটি আলোচনায়। যদিও আওয়ামীলীগ বলছে উপজেলা বাস্তবায়নে তাদের অবদান এবং উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে তাদের পক্ষে ভোটারদের সমর্থন থাকবে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, তাদের পক্ষে রয়েছে ভোটারদের সমর্থন। দেশে যেভাবে যুলুম নির্যাতন চালিয়েছে আওয়ামীলীগ সরকার এর প্রতিবাদ হিসেবে কর্ণফুলীতে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীদের বিজয়ী করবেন।
আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারুক চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচিত হলে রাস্তাঘাটা সংস্কার, কর্ণফুলী নদীর ভাঙ্গন রোধ, আদালত স্থাপন, ভূমি অফিস স্থাপন, থানা ভবন, উপজেলা পরিষদ ভবন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, খেলার মাঠ ও বিনোদন কেন্দ্র, সরকারী স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করাই তার প্রধান কাজ। জনগনের মৌলিক চাহিদা পূরন করে আধুনিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধরে রেখে গ্রীন উপজেলা গড়ে তোলা হবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল জুলধা ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসনের অস্থায়ী কার্যালয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ভূমিপ্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি। কর্ণফুলীকে উপজেলা বাস্তবায়ন করা ভূমিপ্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির প্রয়াত পিতা প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর স্বপ্ন ছিল।