
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক অযৌক্তিক হারে গৃহকর বৃদ্ধির প্রতিবাদে নগরীতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিএনপি। সোমবার বিকেলে নগরীর নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী হওয়া সত্বেও সেখানে ১৭% ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়নি। পক্ষান্তরে অবহেলিত চট্টগ্রামের মানুষ যেখানে তাদের ন্যায্য নাগরিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত, রাস্তাঘাট ঘাটের বেহাল দশা, জলবদ্ধতা এবং স্বাস্থ্য সেবার চরম সংকটময় জীবন যাপন করার ফলেও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক অস্বাভাবিকভাবে গৃহকর নির্ধারণ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অমানবিক।
তিনি বলেন-চট্টগ্রামবাসী কোনভাবেই তা মেনে নিবে না। এছাড়াও ৪১টি ওয়ার্ড নিয়ে কর্পোরেশন এলাকা হলেও বেশিরভাগ ওয়ার্ড শহরতলী এলাকায় অবস্থিত। যেখানে এখনো পর্যন্ত ঐ এলাকার মানুষের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা দিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে সিটি মেয়র। বঞ্চিত ঐসকল ওয়ার্ড সমূহের উপর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অযৌক্তিক ট্যাক্স নির্ধারণ সমুচিন হয় নাই।
ডা. শাহাদাত মন্ত্রণালয় কর্তৃক কালো আইন প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়ে তিনি মেয়রের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি যদি নিজেকে জনগণের প্রতিনিধি মনে করেন তাহলে মন্ত্রণালয় কর্তৃক কালো আইন বাদ দিয়ে জনগণের কাতারে ফিরে আসতে হবে। আইন জনগণের জন্য কিন্তু সে আইন যদি জনগণের কল্যাণে না হয় তাহলে সে আইন জনগণের স্বার্থে বাতিল করা উচিত।

বিএনপি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক অস্বাভাবিক ট্যাক্স নির্ধারণ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে হুসিয়ারী করে বলেন-আগামীকাল থেকে প্রত্যেক ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এবং থানায় থানায় কর্মসূচি পালন করা হবে। প্রয়োজনে পরবর্তীতে মহা সমাবেশ থেকে হরতাল অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সমাবেশে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, সিটি কর্পোরেশনের নতুন কর মূল্যায়নে গৃহকর বেড়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামবাসী এখন ক্ষোভে উত্থাল। বিগত সময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় আয়কর ও গৃহকরের কারণে তাদেরকে ডাবল ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। নাগরিক সেবা নিশ্চিত না করে এই গৃহকর বৃদ্ধি কোন অবস্থাতে গ্রহণ যোগ্য নয়। তিনি বলেন, কর বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষের ঘরভাড়া বেড়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন জোর করে গৃহকর আদায়ের চেষ্ঠা করলে তা জন অসন্তোষ বিষ্ফোরণে রূপ নিবে।
মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, ভবনের ভাড়া থেকে আয়ের উপর সিটি কর্পোরেশনকে আবার আয়কর বিভাগকেও একই আয়ের উপর কর দিতে হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে আইন সংশোধন করতে হবে। তিনি বলেন জোর করে ভোট নিবেন আবার জোর করে ট্যক্স নিবেন এটা চট্টগ্রামবাসী কখনো মেনে নিবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এম এ আজিজ, মুহাম্মদ মিয়া ভোলা, মুহাম্মদ আলী, সভুক্তগীন ছিদ্দিকী মুক্কি, আশরাফ চৌধুরী, কমিশনার মাহবুব আলম, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, ইকবাল চৌধুরী, এড. আব্দুস সাত্তার সরওয়ার, এস.এম. আবুল ফয়েজ, যুগ্ম সম্পাদক এস.এম. সাইফুল আলম, কাজী বেলাল উদ্দিন, শাহ আলম, এসকান্দর মির্জা, আর ইউ চৌধুরী শাহীন। ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন আব্দুর মান্নান, মঞ্জুর আলম মঞ্জু, আনোয়ার হোসেন লিপু, সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুর আলম মঞ্জু, কামরুল ইসলাম, সাবেক কাউন্সিলর হাজী মুহাম্মদ তৈয়ব প্রমুখ।