
চট্টগ্রামে প্রায় ২৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন বেসরকারি সংস্থা প্রত্যাশী’র শাখা ব্যবস্থাপক পলাশ পাল। নগরীর সদরঘাট থানায় দায়ের করা এক মামলায় এ অভিযোগ জানান প্রত্যাশীর এরিয়া ম্যানেজার মোহাম্মদ হোসেন।গত (২২ অক্টোবর) রবিবার সদরঘাট থানায় মামলা এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পলাতক পলাশ পাল প্রত্যাশীর চট্টগ্রাম মহানগরীর সদরঘাট থানার মাদারবাড়ী শাখা ব্যবস্থাপক ছিলেন।
মামলায় পলাশ পালসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়। কিন্তু এ মামলা করার আগেই পলাশ পাল নিখোঁজ হয়েছেন দাবি করে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে একই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ফলে বিষয়টি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রত্যাশীর প্রধান কার্যালয় থেকে গত ১৪ অক্টোবর পলাশ পালকে প্রত্যাশীর চান্দগাঁও শাখায় বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছিল। ২১ অক্টোবরের মধ্যে যোগদানের নির্দেশনা ছিল। কিন্তু তিনি যোগদান না করে ২১ অক্টোবর ভোরে কাউকে কিছু না বলে এবং অফিসের ঋণে কেনা মোটরসাইকেলের চাবি রেখে লাপাত্তা হয়ে যান।
একই দিন সকাল সাড়ে ৯টায় নতুন শাখা ব্যবস্থাপক কনক কুমার দাশ যোগদান করতে মাদারবাড়ী শাখায় পৌঁছে পলাশ পালকে পাননি। এ সময় পলাশ পালের মোবাইল ফোন নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়।
অফিসের কেউ পলাশ পালের অবস্থান সম্পর্কে জানাতে না পারায় নতুন ব্যবস্থাপক বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। পরে প্রত্যাশীর পক্ষ থেকে পলাশ পালের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এ বিষয়ে সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
পরে সংস্থার নিরীক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা কার্যালয়ের নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখেন, সমিতির মধ্যে বেনামি ঋণ, সমিতির সদস্যদের ঋণের কিস্তি বাবদ অগ্রিম আদায়, সঞ্চয় উত্তোলন ও ক্যাশবুক ঘাটতিসহ ২৪ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৯ টাকা আত্মসাৎ করেছেন পলাশ পাল। এ ছাড়া আরো আত্মসাতের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
প্রত্যাশীর নির্বাহী পরিচালক মনোয়ারা বেগম বলেন, পলাশ পালের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে সদরঘাট থানায় পলাশ পাল নিখোঁজ হয়েছেন বলে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে ২১ অক্টোবর। এই ডায়েরীটি করার পর পুলিশ তাঁর খোঁজ শুরু করে। কিন্তু এখনো তাঁকে পাওয়া যায়নি।
ঘটনার বিষয়ে সদরঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মর্জিনা আকতার বলেন, সংস্থার টাকা আত্মসাতের পর প্রতারণা করতেই পলাশ পালের পক্ষে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। ঘটনার পরদিন প্রত্যাশীর পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন পলাশ পালকে খোঁজা হচ্ছে। তাঁকে পাওয়া গেলে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে।
একই বিষয়ে কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পলাশ পাল মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন। তাঁর অবস্থান চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। প্রাথমিক অনুসন্ধানে পুলিশ মনে করছে, প্রত্যাশী সংস্থার আত্মসাৎকৃত টাকা না দিতেই সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছিল। তবে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হবে পলাশ পালকে পাওয়া গেলে।