
নৃশংসভাবে খুন হওয়া তরুণ আইনজীবি মো. ওমর ফারুক বাপ্পী হত্যার প্রতিবাদে আজ সোমবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম আদালতে পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করছে সর্বস্তরের আইনজীবিরা। কর্মবিরতি পালনকালে আদালত ভবনের সামনে মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছ শত শত আইনজীবি।
সকাল থেকে কাজে অংশ না নেয়ায় আদালত পরিচালনা কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে হাজার হাজার বিচার প্রাথী ভোগান্তিতে পড়েছেন।
আইনজীবী ওমর ফারুক বাপ্পী খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে এক নারীসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ সোমবার ভোরে কুমিল্লা থেকে তাদের আটকের পর চট্টগ্রাম নিয়ে আসেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই)। এক নারীসহ ২ জনকে আটকের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈনউদ্দিন। তবে আটক দুইজনের পরিচয় জানাতে অস্বিকার করেন তিনি। মামলার তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম পরিচয় রাখা হয়েছে বলে জানাগেছে।
পুলিশ জানায় আটক দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আরও কয়েকজনকে আটকের চেষ্টা চলছে। সবাইকে আটক করতে পারলে প্রকৃত তথ্য জানা যাবে।
এদিকে আইনজীবিদের একটি সুত্র দাবী করেছেন রবিবার সকালে পুলিশ কক্সবাজারের চকোরিয়া থেকে সাবেক স্ত্রী রাশেদাকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু এ বিষয়ে নগরীর চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল হুদার কাছে জানতে চাইলে তিনি পাঠক ডট নিউজকে বলেন, আইনজীবি ওমর ফারুক বাপ্পী হত্যার অভিযোগে এখনো কেউ ধরা পড়েনি। তবে সম্ভাব্য খুনিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

ধারণা করা হচ্ছে আটক দুজনের মধ্যে আইনজীবি বাপ্পীর সাবেক স্ত্রী রাশেদা বেগম রয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতির আয়োজনে কর্মসূচি চলাকালে বক্তরা অবিলম্বে আইনজীবি ওমর ফারুক বাপ্পী হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবী জানান। এবং খুনিদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান আইনজীবি নেতারা। এর আগে গতকাল রবিবার আইনজীবিরা একই দাবীতে আদালতের কার্যক্রমে অংশ না নিয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বার কাউন্সিলের সদস্য ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রতন রায় ও সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ, সাবেক সভাপতি মুজিবুল হক চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী প্রমুখ।
এদিকে দুই দিন পার হলেও চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত কাউকে চিহিৃত কিংবা গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
উল্লেখ্য গত শনিবার সকালে আইনজীবি মো. ওমর ফারুক বাপ্পীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ নগরীর বাকলিয়ার বড় মিয়া মসজিদের সামনে একটি ভবনের নীচ তলা থেকে। তার হাত-পা ও মুখ বাধাছিল। এবং পুরুষাঙ্গ কাটা ছিল। পুলিশের ধারণা বাপ্পীকে নির্যাতন চালিয়ে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা পারিবারিক বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। তবে পুলিশ ২৪ ঘন্টা পরও হত্যাকাণ্ডে কোন ক্লু বের করতে পারেনি।
শনিবার রাতে এই ঘটনায় বাপ্পীর বাবা বাদি হয়ে নগরীর চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও সহকর্মী আইনজীবিদের ধারণা করা হচ্ছে আইনজীবি বাপ্পীর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী রাশেদার হাত রয়েছে। তালাকের আগে উভয়ের মধ্যে বিরোধ ছিল। মামলা পাল্টামামলা করেছে উভয়ে। ঘটনার পর থেকে সাবেক স্ত্রী রাশেদা বেগম পলাতক বলে চকবাজার থানা পুলিশ জানায়।