
সীত্কুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
চাঁদাবাজির টাকা পূণরায় ব্যবসায়ীদের ফেরত দিলেন সীতাকুণ্ডের আলোচিত সেই স্বাস্থ্য সহকারী সুরেশ চন্দ্র দাশ। শাস্তি এড়াতে ক্ষমতাসীন স্থানীয় নেতাকর্মীকে ব্যবহার করে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার জোড়ামতল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগকারী জোড়ামতল ভাই ভাই বেকারী মালিক শরিফুল ইসলাম জানান, শনিবার স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মীকে নিয়ে স্বাস্থ্য সহকারী সুরেশ আমার বেকারীতে আসে। তারা আমার অভিযোগে স্বাস্থ্য সহকারীর চাকুরি যেতে বসেছে বলে জানান।
এসময় স্বাস্থ্য সহকারী সুরেশ ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে আমার কাছ থেকে নেওয়া চার হাজার টাকা আমাকে ফেরত দেন। এছাড়া এ ঘটনার ব্যাপারে উর্দ্ধতন কোন কর্মকর্তা তদন্তে এলে তাদের কিছু বলতে নিষেধ করেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকান্ড না করার প্রতিশ্রুতি দেন।
অপরদিকে একই এলাকার ব্যবসায়ী ভাই ভাই হোটেল মালিক মো. শামিম জানান, শনিবার সকালে স্থানীয় আ’লীগ নেতা মতিন মেম্বারকে নিয়ে সুরেশ আমার বাড়িতে আসে। এসময় তার চাকুরী বাঁচাতে আমাকে লিখিত দিতে বলেন। এতে আমি অস্বীকৃতি জানালে সন্ধ্যায় পূণ:রায় আমাকে মতিন মেম্বারের বাড়িতে নিয়ে যান। এসময় সুরেশ ও দলীয় লোকজনের উপস্থিতিতে একটি সাদা কাগজে আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়। তবে আমার কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দেয়নি।
নিজেকে স্যানিটেশন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সুরেশের চাঁদা আদায়ের অভিযোগে গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটির ডেপুটি সার্জন ডা.মো.হুমায়ন কবির জানান,“অভিযোগকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর আদায় ও টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি আমি অবগত না। সিভিল সার্জনের নির্দেশে আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্ত কাজ শুরু করেছি। তবে অভিযোগকারী ব্যবসায়ীদের সাথে এখনো কথা হয়নি। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আভিযোগকারীর সাথে কথা বলার পর পূর্ণঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেবো।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্বাস্হ্য সহকারী সুরেশ দাশের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মুঠোফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার স্বাস্থ্য সহকারী সুরেশ নিজেকে উপজেলা স্যানিটেশন কর্মকর্তার সহকারী পরিচয় দিয়ে অভিযানের ভয় দেখিয়ে জোড়ামতল এলাকার ভাই ভাই হোটেল মালিক শামিমের কাছ থেকে দেড় হাজার ও ভাই ভাই বেকারী মালিক শরিফুল ইসলামের কাছ থেকে চার হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেন।
এঘটনার পরের দিন দু’ব্যবসায়ী সুরেশের আসল পরিচয় জানতে পেরে চাঁদাবাজির প্রতিকার চেয়ে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ নিয়ে পাঠক ডট নিউজে সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশ হলে টনক নড়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের।
ঘটনায় অভিযুক্ত স্বাস্থ্য সহকারী সুরেশকে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা.আজিজুর রহমান সিদ্দিকী ২৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকালে সীতাকুণ্ড থেকে বোয়ালখালীতে শাস্তিমূলক বদলী করেন।
এছাড়া ঘটনার তদন্ত স্বাপেক্ষে সাত কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলে তিনি ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো.হুমায়ন কবির, হাটহাজারী ইউএইচিপিও ডা. শেখ ফজলে রাব্বী, মেডিকেল অফিসার ডা. মো.ওয়াজেদ চৌধুরীর সমন্বয়ে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
*সীতাকুণ্ডের সেই চাঁদাবাজ স্বাস্থ্য সহকারীকে শাস্তিমূলক বদলী
*সীতাকুণ্ডে স্বাস্থ্য কর্মী সুরেশ দাসের চাঁদাবাজি