
গতকাল বৃহস্পতিবার ২৮ জুন সকাল ১১ টার সময় চান্দগাঁও থানাধীন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজে ছাত্রলীগ নামধারী কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক বিনা অনুমতিতে অতর্কিতে অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করে উপাধক্ষ্যের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও কলেজের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করার প্রতিবাদে নুশিসভুক্ত (নুরুল ইসলাম শিক্ষা সমন্বয়) সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এক প্রতিবাদ সভা করেন।
অধ্যক্ষ মোহাম্মদ দবির উদ্দীন খানের সভাপতিত্বে উক্ত প্রতিবাদ সভায় ছাত্রলীগের নামে উচ্ছৃঙ্খল যুবকরা বৃহস্পতিবার সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে বিশৃঙ্খল সৃষ্টির নিন্দা করা হয়।
উল্লেখ্য, উক্ত দিন কলেজে একটি শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম ও পরীক্ষা কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে বহিরাগতরা উপাধ্যক্ষ কুতুব উদ্দীনের সাথে অযাচিতভাবে কলেজের প্রশাসনিক কাজে কথা বলে এবং নানা অন্যায় আবদার করে। উপাধ্যক্ষ বারবার এসব বহিরাগতদের ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে বললে তারা ছাত্রলীগের বহিস্কৃত নেতা নুরুল আজিম রনির মতই চাঁদা দাবি করে। পরিস্থিতির অবনতি হলে এক পর্যায়ে কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা এগিয়ে এলে বহিরাগতরা পালিয়ে যায়।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন উপাধ্যক্ষ কুতুব উদ্দিন, অধ্যাপক এস.এম. আইয়ুব, অধ্যাপক মো: আবু বকর সিদ্দিকী, অধ্যাপক কামরুন্নাহার খন্দকার, অধ্যাপক শামীমা আফরোজ, অধ্যাপক অহিদুল আলম, অধ্যাপক বরন দাশ, অধ্যাপক রুনু চৌধুরী, অধ্যাপক সুদত্ত কুমার বড়ুয়া, অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, কতিপয় নামে এক সাংবাদিককে ব্যবহার করে ছাত্রলীগ নামধারীরা হাজেরা-তজু ডিগ্রি কলেজ তথা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বি.এস.সি’র ভাবমূর্তি নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র করছে। যিনি একক প্রচেষ্টায় ৩২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে দেশে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন-সেখানে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কথিত ছাত্রলীগ নামধারীরা কেন বারবার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে তা রহস্যজনক। নুশিসভুক্ত শিক্ষাকরা অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা রক্ষায় বিবেকবান ছাত্র সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
নগরীর প্রসিদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাজেরা-তজু-ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বানচাল করার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক ভাবে নুশিস পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ এই সভা আহ্বান করে। এতে শিক্ষকরা হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজে বহি®কৃত ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনির নীল নক্সা বাস্তবায়নে ছাত্রলীগ নামধারীদের ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
প্রতিবাদ সভায় শিক্ষকরা বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ছাত্রলীগের নামে যারা এহেন গর্হিত কাজে লিপ্ত তারা নির্বাচনের আগে সরকারের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ছাত্রলীগের দায়িত্ব হওয়া উচিত ছিল ক্লাসে অনুপস্থিত ছাত্রদের ক্যাম্পাসমুখী করা, জিপিএ-৫ পেতে বিনামূল্যে মেধাবী ছাত্রদের দিয়ে ক্লাস করানোর উদ্যোগ নেয়া। কিন্তু শিক্ষা সহায়ক এসব কার্যক্রম না করে ছাত্রলীগ নামধারীরা আজ টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজিতে লিপ্ত। যেখানে নগদ অর্থের গন্ধ সেখানেই যেন ছাত্রলীগ। সভায় শিক্ষকরা বলেন, ছাত্রলীগ নামধারীরা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা মানছে না, মানছেনা শিক্ষকদেরও। তাদের উদ্ধত আচরণে শিক্ষকরা আজ বিব্রত। সারাদেশের ছাত্র সমাজের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে ছাত্রলীগের ব্যানারে কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক। এদের এখনই প্রতিহত করতে হবে।
বক্তারা বলেন, হাজেরা-তজু ডিগ্রি কলেজ বেসরকারি কলেজের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে ও হতদরিদ্র শিক্ষার্থীদের সাহায্যে বছরব্যাপী কাজ করছে নীরবে। ছাত্রলীগ কেন বারবার এই প্রতিষ্ঠানে অন্যায় হস্তক্ষেপ করছে তা রহস্যজনক। কারণ দেশে ছাত্রলীগ ছাড়া আরো অনেক ছাত্র সংগঠন আছে। সভায় অবিলম্বে কলেজে অনুপ্রবেশকারীদের গ্রেফতার দাবি করা হয়। সভায় পরবর্তীতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকলে সারাদেশের শিক্ষক সমাজকে সাথে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। প্রেসবিজ্ঞপ্তি
* বিএসসি’র কলেজে অতিরিক্ত ফি আদায়, ছাত্রলীগকে বের করে দিল মন্ত্রীপুত্র