
আজ শনিবার গণভবনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা। দীর্ঘ দিন পর অনুষ্ঠিতব্য এ সভাকে গিয়ে সারাদেশের দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনা দেখা দিলেও এর বিপরীত চিত্র দেখা গেছে নেতাদের মধ্যে।

জানাগেছে, দায়িত্বে বাইরে থাকা বেশ কিছু নেতাকর্মী বিশেষ কায়দায় এবং সিনিয়র নেতাদের ম্যানেজ করে কিংবা টাকা দিয়ে প্রতিনিধি কার্ড সংগ্রহ করে সম্মেলনে যোগদান করছেন। এতে সম্মেলনের নিরাপত্তা বিঘ্ন হতে পারে বলে প্রশ্ন তুলেছেন নেতারা।
অভিযোগ উঠেছে, চট্টগ্রামের উত্তর জেলার আওতাধীন সীতাকুণ্ড উপজেলায় অসংখ্য সাধারণ নেতাকর্মী ও নব্য আওয়ামী লীগার সম্মেলনের প্রতিনিধি কার্ড গলায় ঝুলিয়ে ইতোমধ্যে ঢাকায় পৌছেছেন।
উল্লেখ্য দলের এ বিশেষ বর্ধিত সভায় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ, দেশের ৪টি বিভাগের (রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রাম) অধীন প্রতিটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত দলীয় চেয়ারম্যান, মহানগরের অধীন সংগঠনের প্রতিটি ওয়ার্ডের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও দলীয় নির্বাচিত কাউন্সিলর ও জেলা পরিষদের নির্বাচিত দলীয় সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।
এর বাইরে দলের অন্য কোন নেতাকর্মী প্রতিনিধি কার্ড পাওয়ার কথা না। অভিযোগ পাওয়া গেছে, সীতাকুণ্ডে বেশ কিছু নেতা-কর্মী (যারা দলের কোন পদে নাই) সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষরযুক্ত কার্ড গলায় লাগিয়ে ইতোমধ্যে সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
এর মধ্যে ছলিমপুর ইউনিয়নের আমজাদ হোসেন(বহিস্কৃত), মাহবুবুল আলম, বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নে আইয়ুব আলী ও সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, বারৈয়াঢালায় নুরুল মোস্তফা সহ ২ জন জন কার্ড পেয়েছে বলে নেতারা অভিযোগ করেন।

এছাড়া যে সকল ইউনিয়নে দলীয় চেয়ারম্যান রয়েছে। তারা আবার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন এমন ৫ চেয়ারম্যান ২টি করে কার্ড নিয়েছেন। (একটি দলীয় পদবী অন্যটি চেয়ারম্যান হিসেবে) একটি রেখে অন্যটি বিক্রি করে দিয়েছেন। অথবা পছন্দের নেতা কর্মীকে হস্তান্তর করেছেন।
এর মধ্যে দুই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কার্ড হস্তান্তরের বিষয়টি ফেসবুকে সমালোচনা চলছে।

এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে বাডবকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজি পাঠক ডট নিউজকে বলেন, আমার ইউনিয়নে প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারী হিসেবে আমরা দুজন উপজেলা আওয়ামী লীগের েসাধারণ সম্পাদকের হাত থেকে কার্ড সংগ্রহ করেছি। কিন্তু ফেসবুকে আরো দুজন গলায় কার্ড ঝুলিয়ে ছবি ছেড়েছে। তারাতো দলের কোন পদ পদবীতে নাই। তারা কিভাবে পেয়েছে। অনেকে আমাকে ফোন করে জানতে ছেয়েছে। আমি নিজেও জানিনা, তারা কিভাবে কার্ড ম্যানেজ করেছে। একটি শক্তিশালী দলের মধ্যে এ ধরণের বেআইনী এবং শৃংখলা বর্হিভূত কাজ হলে সবার জন্য লজ্জাজনক।
তিনি বলেন, চেয়ারম্যান এবং দলের নেতা হিসেবে আমাকে একটি কার্ডই দিয়েছে। অন্য কোন নেতা বা চেয়ারম্যান দুটি কার্ড পেয়েছে কিনা আমার জানা নেই। তবে কেউ না কেউতো পেয়েছে। তা না হলে বাড়তি কার্ডগুলো আসলো কিভাবে..?
এ ব্যাপারে জানতে রাতে দলের চট্টগ্রাম উত্তর সাধারণ সম্পাদক এমএ সালামের কাছে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
নির্ধারিত প্রতিনিধির বাইরে অনেকে কার্ড পাওয়ার কথা স্বীকার করে ঢাকায় অবস্থানরত সীতাকুণ্ড উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাকের ভূঁইয়া বলেন, বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। আমি নিজেও জানি না তারা কার্ড কিভাবে পেয়েছে। আমি আমার কাছে আসা তালিকারভূক্তদের কাছে কার্ড হস্তান্তর করেছি। একটি কার্ডও বাড়তি পায়নি। কেউ পাওয়ার কথাও না। কিন্তু অনেকে আমার কাছে জানতে চেয়েছে তালিকার বাইরে কিছু লোক কিভাবে কার্ড পেয়েছে। এটাতো শৃঙ্খলা বর্হিভূত কাজ। যেখানে দলের সভানেত্রী উপস্থিত থাকবেন সে অনুষ্ঠানে যে কেউ প্রবেশ করতে দেয়া যায় না। এটা নিরাপত্তার বিষয়।
দলীয় সুত্রে জানাগেছে, আজ শনিবার বেলা ১১টায়। বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনি মতবিনিময় শুরু করেবেন বলে জানা গেছে।
*গণভবনের উদ্দ্যেশে চট্টগ্রাম ছেড়ে গেলেন নগর আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ