
নগরীতে এবার ভুল চিকিৎসায় প্রাণ গেলো ৩ বছরের ফুটফুটে শিশু রাইফা খানের। শুক্রবার (২৯ জুন) মধ্যরাতে এ নগরীর ম্যাক্স হাসপাতালে ঘটনা ঘটেছে।
নিহত শিশু রাইফা খানে দৈনিক সমকাল পত্রিকার চট্টগ্রাম অফিসের স্টাফ রিপোর্টার রুবেল খানের মেয়ে।
ঘটনার পর সাংবাদিকদের প্রতিবাদের মুখে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সসহ ৩ জনকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে গেলেও পরে কতিপয় চিকিৎসক নেতাদের হুমকি ধমকির কারণে গভীর রাতে থানা থেকে ৩ জনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
তবে সাংবাদিক নেতাদের প্রতিবাদের কারণে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন পুলিশ ও সাংবাদিকদের সমন্বয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান ডা. মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী। তিনি বলেন, একজন সাংবাদিক কন্যার চিকিৎসায় ভুলের কারণে মৃত্যুর অভিযোগ উঠার পর এটি তদন্ত করতে আমরা কমিটি গঠন করেছি। রিপোর্ট পাওয়ার পর অভিযুক্ত চিকিৎসক ও নার্সদের গাফেলতি পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, অভিযোগ জানান পরপর আজ সকালে আমি নিজেই ম্যাক্স হাসপাতালে গিয়ে কথা বলেছি।
সংবাদিক রুবেল খান জানায়, তার শিশু কন্যা রাইফার ঠাণ্ডাজনিত কারণে গলা ব্যথা করায় খাওয়া বন্ধ করে দিলে বৃহস্পতিবার বিকালে ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাতে রাইফাকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হলে সে অস্বস্তি বোধ করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা শিশু বিশেষজ্ঞকে কল দেওয়ার পরামর্শ দেন।
এরপর শিশু বিশেষজ্ঞ বিধান বড়ুয়া এসে একই ধরনের ওষুধ দেন। রাতে ওই ওষুধ দেওয়ার পর থেকে রাইফার খিঁচুনি শুরু হয়। দায়িত্বরত চিকিৎসককে জানালে তিনি ডা. বিধান বড়ুয়ার সাথে কথা বলে ‘সেডিল’ ইনজেকশন পুশ করেন। এরপর রাইফা নিস্তেজ হয়ে যায়।
এর পর সাংবাদিকরা খবর পেয়ে ম্যাক্স হাসপাতালে গিয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসকসহ ৩ জনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেন।
অভিযোগ উঠেছে, অভিযুক্ত চিকিৎসকসহ ৩ জনকে থানায় নেয়ার পর ক্ষমতাসীন দলে চিকিসক নেতা ডা, ফয়সাল ইকবালসহ বিএমএর কয়েকজন নেতা থানায় গিয়ে আটককৃতদের ছেড়ে দেয়ার জন্য পুলিশকে চাপ সৃষ্টি করে। অন্যথায় অনিদ্দিষ্টকালের জন্য চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়।
অন্যদিকে আটকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে দাবী জানান সাংবাদিক নেতারা। এ পরিস্থিতিতে ভোর পর্যন্ত থানায় ত্রিপক্ষিয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
চকবাজার থানার ওসি আবুল কালাম পাঠক ডট নিউজকে বলেন, সাংবাদিক, বিএমএ ও পুলিশের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের সভায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিটির রিপোর্টে ভিক্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে এ সিদ্ধান্তের পর ভোরে আটক ৩ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়।