
মিথ্যা মুসলমান যুবক পরিচয় দিয়ে বিয়ে এবং যৌতুকের দাবীতে মারধর করার ঘটনায় চট্টগ্রামে পুলিশের এক কনেস্টেবলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তার নাম মো: শিশির (প্রকৃত নাম শিশির কুমার ঘোষ) চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ, আইডি নং: বিপি ৯৪১৩১৬৩১৫৪।
ফরিদা ইয়াসমিনের দায়ের করা মামলায় চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন বিশেষ আদালত-৩ এর উপস্থিত বিচারক মো.সেলিম মিয়া বুধবার এ গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবি মোহাম্মদ আবু তাহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, বাদী ফরিদা ইয়াছমিন নগরীর ইপিজেড চট্টগ্রামে একটি গার্মেন্টেসে এ চাকুরী করা কালিন আসামী শিশিরের সাথে পরিচয় হয়। উক্ত পরিচয়ের সূত্র ধরে উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আসামী তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে চট্টগ্রাম ও সিলেটের বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যায় এবং পরষ্পর ঘনিষ্ট হয়। এক পর্যায়ে শিশির তাকে বিয়ের জন্য চাপাচাপি করলে সে তালবাহানা করে। সে মুসলিম পরিচয়ে প্রেমের অভিনয় করলেও পরে ফরিদা ইয়াছমিন জানতে পারেন শিশির একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বি।
শিশিরের মিথ্যা পরিচয় ফাঁস হয়ে পড়লে ফরিদা তাকে কেন প্রতারণা করেছেন অভিযোগ করলে সে সাদা কাগজে লিখিতভাবে জানায়, যে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেছে এবং দশ লক্ষ টাকা কাবিন সম্পাদনে বিয়ে করবে।
দীর্ঘদিন অবাধ মেলামেশার পর প্রণয়নের পরও শিশির বিয়ে করতে গড়িমশি করতে থাকলে ফরিদা এব্যাপারে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ করে। পুলিশ কর্মকর্তাদের তদন্তে ঘটনা প্রমাণিত হলে সে তড়িগড়ি গত ০৩/০১/২০১৬ইং তারিখে চট্টগ্রামের নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে হলফনামা সম্পাদনে ধর্মান্তরিত হয়ে ৩১নং আলকরণ ওয়ার্ড কাজী অফিসে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক বিয়ে সম্পন্ন করে।
বাদী ফরিদা অভিযোগ করেন, সে লোক দেখানোর জন্য বিয়ে করলেও প্রকৃত পক্ষে তাকে ভালোবেসে বিয়ে করেনি। বিয়ের পর হতে যৌতুকের জন্য নানান বাহানা দিয়ে আমাকে মারধর শুরু করে। এবং পূর্বপরিকল্পিতভাবে চলতি বছরের ৭ জুন পাঁচ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবীতে আমাকে বেদমভাবে নির্যাতন করে আহত করে।
এ নিয়ে ২১ জুন তিনি চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন বিশেষ ট্রাইবুন্যাল-৩ এ নারী শিশু মামলা নং: ৫২৬/২০১৬ইং দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য ওসি আকবর শাহ থানাকে নির্দেশ দিলে উক্ত থানার এসআই মাহবুব বিষয়টি তদন্ত করে বাদীর অভিযোগের সমস্ত বিষয় প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত মর্মে আদালতে রির্পোট দাখিল করেন। কিন্তু যৌতুকের দাবীর বিষয়ে চাক্ষুস প্রমাণ নাই মর্মে উল্লেখ করেন।
এতে বাদী ফরিদা উক্ত পুলিশ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি প্রদান করলে আদালত সার্বিক বিবেচনায় পুলিশ কনস্টেবল শিশিরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন।