
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মার্কেট গুলোতে যখন উপচে পরা ভিড় ঠিক তখনই উল্টো চিত্র দেখা গেছে দেশীয় পণ্যের ব্রান্ড আড়ংয়ে। হঠাৎ করেই ক্রেতা শূন্যতায় ভুগছে আড়ং। তবে আড়ং এর আশেপাশে দোকানগুলোতে স্বাভাবিক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
আজ মঙ্গলবার (৪ জুন) রাজধানীর একাধিক আড়ং আউটলেট ঘুরে সকাল ১১টায় ধানমন্ডি সাইন্সল্যাবে অবস্থিত তিন তলা বিশিষ্ট আড়ং আউটলেটে দেখা যায়, পুরো তিন তলায় ৫ থেকে ৬ জন ক্রেতা ঘোরাঘুরি করছেন। তবে পাশেই অন্য আউটলেটগুলোতে স্বাভাবিক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
সকাল ১১ টা ৪০ মিনিটের দিকে একই চিত্র দেখা গেছে বসুন্ধরা শপিং সেন্টারের আড়ং আউটলেটে। এখানেও ক্রেতাদের সন্তুষ্ট মূলক উপস্থিতি নেই। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট একাধিক আড়ং আউটলেটের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও তারা কেউই এ বিষয়ে মুখ খোলেননি।
এদিকে, বসুন্ধরা শপিং সেন্টারের আড়ং আউটলেটে পোশাক কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, ‘আড়ং নিজেদের অপরাধ ঢাকতে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে, পেশি শক্তি দেখিয়েছে। একটা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেটা খুবই নোংরা মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে। আমি আড়ং থেকেই কিনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এই ঘটনা পরে আর কিনব না। দেখতে এসেছিলাম মানুষ এই প্রতিবাদে কেমন সাড়া দিচ্ছে।’
সাইন্সল্যাব আউটলেটে মেয়ের জামা কিনতে আসা ফাতেমা বলেন, ‘আড়ং দাম বাড়িয়ে নেয়। এটা আমরা সবাই জানি। তারপরও এখানে আসি, তবে কাল যে ঘটনা ঘটেছে। এরপরে আড়ং বর্জন করা উচিৎ।’
তিনি বলেন, ‘মেয়ে একটা জামা আগেই পছন্দ করে রেখেছিল। তাই তার জেদের কারণে কিনতে এসেছি। না হলে আসতাম না।’
উল্লেখ্য, এর আগে আড়ংয়ের উত্তরা শাখায় একই পোশাক এক সপ্তাহেরও কম সময়ের ব্যবধানে, প্রায় দ্বিগুণ দাম বাড়ানোর অভিযোগে সাড়ে ৪ লাখ টাকা জরিমানা আউটলেটটি ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দেয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আড়ংয়ের আউটলেটটি বন্ধ ঘোষণা করার কয়েক ঘণ্টা পরই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে বদলির আদেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে তাকে আগামী ১৩ জুনের মধ্যে তাকে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সোমবার সন্ধ্যায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে বদলির আদেশটির প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ১৩ জুনের মধ্যে মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে তার বদলি কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে, অন্যথায় ১৩ জুন দুপুরে তার বর্তমান কর্মস্থল হতে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) মর্মে গণ্য হবেন। তার নতুন কর্মস্থল সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর খুলনা জোন। তাকে এস্টেট ও আইন কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হলো।
এর পরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে তীব্র সমালোচনার মধ্যে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপপরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জনাব ফরহাদ হোসেন দোদুল।