
বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাস মোকাবেলায় চট্টগ্রামে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ তিনটি হাসপাতালে খোলা হয়েছে আইসোলেশন ইউনিট।
সমুদ্রগামী জাহাজের মাধ্যমে ‘করোনা ভাইরাস’ যাতে ছড়াতে না পারে সেই লক্ষ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত তথ্য পেতে বিমানবন্দরে তথ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে।
বন্দর সুত্রে জানাগেছে- চট্টগ্রাম বন্দরের বহিঃনোঙ্গরে অবস্থানরত বিদেশি জাহাজগুলোতে গিয়ে নাবিক এবং ক্রুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন চিকিৎসকরা। বিশেষ করে করোনা ভাইরাস ঠেকাতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সন্দেহভাজন রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে বন্দর হাসপাতালেও একটি ওয়ার্ডকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রস্তুত রাখা হয়েছে একটি সী অ্যাম্বুলেন্সও।

চীনসহ আরো কয়েকটি দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বন্দরও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল জুলফিকার আজিজ। তিনি জানান, যেহেতু মানুষের মাধ্যমেই এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে, তাই বিদেশি নাবিকদের শারীরিক পরীক্ষার পর বন্দরে নামতে দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বন্দরের জেটিতে কর্মরতদের’ও বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বন্দর সুত্রে জানাগেছে, প্রতি মাসে চট্টগ্রাম বন্দর এবং বন্দরের বহিঃনোঙ্গরে কয়েকশ বিদেশি জাহাজের অবস্থান। আর প্রতিটি জাহাজে ৩০ থেকে ৪০ জনের বেশি নাবিক এবং ক্রু থাকছে। যে কারণে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ছড়ানোর ক্ষেত্রে বন্দরও ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। আর তাই বিশেষ ব্যবস্থা বলে জানান বন্দর কর্মকর্তারা। বন্দর এবং বন্দরের বহিঃনোঙ্গরে অবস্থানরত জাহাজগুলোর মধ্যে চীন এবং তার পার্শ্ববর্তী যেসব দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে সেসব দেশের জাহাজও রয়েছে।
এদিকে সীতাকুণ্ড ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) এ ৫টি এবং চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ৪টি বেডের ব্যবস্থা রেখে আইসোলেশন ইউনিট খোলা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর হাসপাতালের পক্ষ থেকে

এদিকে এখনো পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি।
চট্টগ্রাম সিভিল এভিয়েশন সুত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস শনাক্তে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে দুই চিকিৎসকের স্থলে গত শুক্রবার থেকে আরও ৪ জন বাড়িয়ে মোট ৬ জন করা হয়েছে। প্রতিদিন দুই শিফটে চিকিৎসকরা দায়িত্ব পালন করছেন।
বিআইটিআইডি’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ হাসান চৌধুরী বলেন, চীনে অধ্যয়নরত দুই শিক্ষার্থী বাংলাদেশে ফিরে জ্বর অনুভব করায় তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে রোগীদের এমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। রক্ত পরীক্ষার জন্য ঢাকায় জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে নমুনা পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।
সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, তিন হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট খোলাসহ বিমান বন্দরে বাড়ানো হয়েছে চিকিৎসকের সংখ্যা।