
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় লোকালয়ে বন্য হাতির আক্রমণে দেবী রানী (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার ভোরের দিকে উপজেলার উত্তর গুয়াপঞ্চক হিন্দুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত দেবী রানী ওই এলাকার ডা. অরুন কান্তি দে’র স্ত্রী।
এর আগে গতকাল রাবিবার পার্শ্ববর্তি বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছড়িতে বন্য হাতির আক্রমণে জহুরলাল দেব প্রকাশ কালাবাঁসি (৩৩) নামে এক রিক্সা চালক নিহত হন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাহাড়ে নেমে আসে হাতির পাল। লোকালয়ে নেমে এসে বাড়িঘর ভাঙচুর করলে এলাকার লোকজন তাড়ানোর জন্য বের হয়। এসময় দেবী রানী ঘরের সামনেই হাতির পায়ে পৃষ্ট হয়ে শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। দেবী রানী উত্তর গুয়াপঞ্চক এলাকার ডাঃ অরুন কান্তি দে’র স্ত্রী।
নিহত গৃহবধূর মেয়ে পিংকি দে ও ছেলে ঈশান দে বলেন, হাতি নামার খবরে গ্রামবাসীর চিৎকার শুনে আমরা ভয়ে ঘর থেকে বের হই। ওই সময় হাতির সামনে পড়েন মা। সঙ্গে সঙ্গে মাকে তুলে আছাড় মেরে পা দিয়ে চাপ দেয় হাতি। মা তখনই ঘটনাস্থলে মারা যান।’
পল্লী চিকিৎসক অরুণ কান্তি দে বলেন, ‘স্ত্রীর ছিন্নভিন্ন দেহ দেখে পাড়া-প্রতিবেশীরা ভয় পাবেন, তাই স্ত্রীর মৃতদেহ সেলাই করে জোড়া লাগাই। এ কষ্ট কাকে বোঝাব!’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন-পাহাড় থেকে হাতিগুলো লোকালয়ে নেমে এসে বাড়িঘর ভাঙচুর করলে এলাকার লোকজন তাড়ানোর জন্য ঘর থেকে বের হয়। এ সময়ে দেবী রানী ঘরের সামনে হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এজন্য প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে গত দেড় বছরে শুধু আনোয়ারা উপজেলায় হাতির আক্রমণে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে। এর মধ্যে ৭ জানুয়ারি বটতলী ইউনিয়নের নুরপাড়ার গ্রামের সোলায়মান (৭০), ২০১৯ সালের ১৮ই আগস্ট বারখাইন ইউনিয়নের বটতলা এলাকার আবদুল মোতালেব (৬৮), ১৫ জুলাই বৈরাগ ইউনিয়নের হুন্দ্বীপ পাড়ার আখতার হোসেন চৌধুরী (৫০), ২৬ জুন বটতলী ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম এলাকার মোমেনা খাতুন (৬৫) এবং ২০১৮ সালের ১৩ জুলাই বৈরাগ ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর এলাকার আবদুর রহমান (৭০)এর হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে।