
চিকিৎসার অবহেলায় চট্টগ্রামে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন এক বিদেশী নাগরিক। “রুয়েল এসত্রেলে কাতান” (৫১) নামে এ ব্যাক্তি ফিলিপাইনের নাগরিক। কয়েকটি বেসককারী হাসপাতালে ভর্তি না করায় পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর গতকাল শুক্রবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত ১০টায় তার মৃত্যু হয়েছে। এ বিদেশী নাগরিক চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ার টেকের কর্মকর্তা ছিলেন।
চট্টগ্রামস্থ ফিলিপাইন কন্সুলেটের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে কর্মরত প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ার টেক এই বিদেশী নাগরিকের অসুস্থ্যতার বিষয়ে কোন রকমের তদারকি করেনি। এমনকি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে অক্সিজেন ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য অনুরোধ করছে তারা তা করেনি।

জানাগেছে, শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ৪ জুন থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন রুয়েল এসত্রেলে কাতান। চমেক হাসপাতালের ১ নং ওয়ার্ডের ২৮ নং বেডে তাকে রাখা হয়েছিল। তার আগের দিন করোনা টেষ্ট দিলেও তার রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার থেকে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে চমেক থেকে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা করা হয়। শুক্রবার হলি ক্রিসেন্ট ছাড়া কোন হাতপাতালেই তার জন্য কেবিনের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। হলিক্রিসেন্টে কেবিনের ব্যবস্থা হলেও কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তারা অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারবে না। এসময় অক্সিজেন সরবরাহের জন্য তার কর্মস্থল সাইফ পাওয়ার টেকের কাছে সাহায্য চাইলে তারাও কোন সাহায্য করতে রাজি হয়নি।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম ফিলিপাইন কন্সুলেট জেনারেলের চীফ অফ ষ্টাফ শেখ হাবিবুর রহমান জানান, হলি ক্রিসেন্টে নেবার ব্যবস্থা করা হলেও সেখানে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা যাচ্ছিল না। অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে দেবার জন্য কাতানের কর্মস্থল সাইফ পাওয়ার টেকের কর্মকর্তা মোশারফ হোসেনকে অনুরোধ করা হলেও তিনি অপারগতা জানিয়েছেন। এ অবস্থায় শুক্রবার (১৯ জুন) রাত ১০টায় চমেক হাসপাতালেই তার মৃত্যু হয়েছে।তার মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, ‘গত ১৬ দিন ধরে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও আমরা নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টটা আনতে পারিনি। দুঃখজনকভাবে তিনি পৃথিবী থেকেই বিদায় নিলেন।’
চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা.আফতাবুল ইসলাম বলেন, করোনা উপসর্গ নিয়ে একজন ফিলিপাইনের নাগরিক গত ১৬ দিন ধরে আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। করোনার পরীক্ষার জন্য উনার নমুনা নেওয়া হয়েছিল। নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে রেজাল্ট এখনও আসেনি। রাতে তিনি মারা যান।
সাইফ পাওয়ার টেকের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম জানান, জ্বর-শ্বাসকষ্টসহ করোনার লক্ষণ থাকায় গত ৩ জুন সংক্রমণ পরীক্ষার জন্য কাতানের নমুনা পরীক্ষার জন্য দেওয়া হয়। পরদিন তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর শুক্রবার তিনি মারা যান।