ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

পটিয়ায় প্রবাসী বেলাল হত্যার আসামীরা একমাসেও ধরা পড়েনি

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বেলাল উদ্দিনকে পিটিয়ে হত্যার আসামীরা একমাসেও ধরা পড়েনি। মামলার প্রধান আসামি আবদুর রউফ ভুট্টো, তার দুই ছেলে ও তার সহযোগি মহিউদ্দিন প্রকাশ্যে ঘুরলেও পুলিশ বলছে পলাতক।

জানা যায়, পটিয়া উপজেলার জিরি ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ নগর এলাকায় প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলায় গত ৬ জুন মো. বেলাল উদ্দিন (৪০) নামে একজন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী গুরুতর আহত হওয়ার ৭দিন পর ১২ জুন মারা যান। নিহত বেলাল উদ্দিন ওই এলাকার মরহুম নুর আহমদের দ্বিতীয় পুত্র।

আরও খবর:-পটিয়ায় চাঁদাবাজদের হামলায় আহত আমেরিকা প্রবাসী বেলাল মারা গেছেন

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বেলাল ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে আসেন। জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ৬ জুন সন্ধ্যায় মোহাম্মদনগর এলাকায় তার বাড়ির সামনে সন্ত্রাসি আবদুর রউফ ভুট্টো তার সহযোগীদের নিয়ে বেলালের উপর লোহার রড ও ইট দিয়ে আঘাত করে। হামলায় গুরুতর আহত বেলালকে পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা সেবা দিতে থাকে। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে চাইলে সন্ত্রাসী ভুট্টো তার লোকজন দিয়ে হাসপাতালে নিতে বাধা দেয়।

এ অবস্থায় ১১ জুন দুপুরের দিকে তার অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। তখন তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আইসিইউ খালি না থাকায় ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি। এরপর দিনভর বেশ কয়েকটি হাসপাতালে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ঐ রাতে চট্টগ্রামের ফিল্ড হাসপাতাল নেওয়ার পথেই ভোর ৬টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বেলাল।

আরও খবর:-পটিয়ায় আমেরিকা প্রবাসী বেলাল হত্যা: চাঁদাবাজ ভুট্টোসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আরো জানা যায়, ইয়াবা, হত্যা, অস্ত্র, মাদক ব্যবসা ও জায়গা দখলের ১৭ মামলার আসামি সন্ত্রাসি আব্দুর রউফ ভুট্টো আমেরিকা প্রবাসীর গেইটে তালা লাগিয়ে দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

এছাড়াও ভুট্টোর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে-সে চুক্তিভিত্তিক ঝামেলাপূর্ণ জায়গা দখল বাণিজ্যে জড়িত। সে এক সময়ের যুবদলের দুর্ধর্ষ ক্যাডার ছিল। সরকার পরির্বতনের পর প্রাণ বাঁচাতে রাতারাতি দল পাল্টিয়ে বনে যান আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। এরপর তার পেছনে ফিরে থাকাতে হয়নি। এলাকায় ইয়াবা, মাটি, বালি ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম করে সে হয়ে যান মস্তবড় নেতা। মোহাম্মদ নগরের ফকির মোহাম্মদ বাড়ির নয়ন ওরফে সুমন হত্যার প্রধান আসামি এই ভুট্টো।

অভিযোগ রয়েছে, তাকে শেল্টার দিচ্ছেন বেসরকারি কারা পরির্দশক আবদুল হান্নান লিটন। তার এ দৌরাত্ম্যে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

নিহত বেলালের স্বজনরা জানায়, এ মামলার অন্যতম এক আসামী এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরা ফেরা করছে। অথচ পুলিশ বলছে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।

অপরদিকে নিহতের পরিবার আসামীদের হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তারা বলেছেন, আসামীপক্ষ পুলিশকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করায় তাদের গ্রেফতার করছেনা। মামলা তুলে নিতে তাদের বিভিন্নভাবে হুমকিও দিচ্ছে অভিযুক্তরা। অভিযুক্তের প্রধান আসামীর দুই ছেলে ও পশ্চিম পটিয়া ভিত্তিক কিশোর গাং লিডার অভি ও সানি বাদি পক্ষকে বলেছেন, আমরা থানা কিনে ফেলেছি। কিছুই হবেন আমাদের।

বেলাল নিহতের পর মরদেহটি চমেক হাসপাতালের মর্গে ৩৪ ঘন্টা রেখে করোনায় মারা গেছে এমন খবর প্রচারণা চালিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশটি দাফনের জন্যও অপচেষ্টা চালিয়েছিলেন। দুদিন ধরে লাশ পড়ে থাকলেও প্রতিপক্ষ টাকার বিনিময়ে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফন করতে পাঁয়তারা করেছিল। করোনা পজিটিভের অজুহাত তুলে লাশ ময়নাতদন্ত না করে তড়িঘড়ি করে দাফন করতে চেয়েছিল। কিন্তু নিহত বেলাল উদ্দিনের করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। এরপরও পুলিশ হামলাকারীদের পক্ষ হয়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ তুলেছিল নিহত বেলালের পরিবার।

নিহতের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম জানান, আমার ভাই গত ১২ জুন মারা যাওয়ায় পর ঐ দিন আমি পটিয়া থানায় বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও আমার অভিযোগটি গ্রহণ করাতে পানিনি। আঘাতজনিত কারণে আমার ভাইয়ের লাশটি ফুলে গিয়েছিল । তাই লাশটি একটি শীতাতপ লাশবাহী গাড়িতে রাখা হয়েছে চমেক হাসপাতালের মর্গের সামনে। সেদিন সকাল হতে সন্ত্রাসী ভুট্টোর লোকজন হাসপাতালে এসে লাশটি ময়নাতদন্ত ছাড়া বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে অপচেষ্টা চালিয়ে ছিল । আমাদেরকেও নানাভাবে হুমকি দেয়া হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, আমার ভাই মারা যাওয়ায় পর সন্ত্রাসী ভুট্টো তার ফেইসবুকে একটি পোস্টে দিয়েছে- সদ্য আমেরিকা হতে আসা লোকটি বাড়িতে যথাযথ হোম কোয়ারেন্টাইন না মানাতে করোনায় তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ পোস্টটি দিয়ে সে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার পরিকল্পা করছে।

প্রবাসী বেলাল উদ্দিন সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হওয়ার তিনদিন পর ১৪ জুন রাতে মামলা রেকর্ডভুক্ত হয়। নিহত বেলাল উদ্দিনের স্ত্রী বৃষ্টি আকতার বাদি হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় আসামিরা হলেন ইয়াবা, অস্ত্র, ও হত্যাসহ ১৭ মামলার আসামি এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী আবদুর রউফ ভুট্টো (৪৮) ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড সাতকানিয়া উপজেলার মৃত সামশু কবিরের ছেলে মহিউদ্দিন কবির (৫০) এবং সন্ত্রাসী ভুট্টোর দুই ছেলে অভি (২০), সানি (১৮) সহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জন।

নিহতের স্ত্রী বৃষ্টি আকতার বলেন, আমি ও আমার প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী ভূট্রোর হুমকি ধমকিতে রিতীমত অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। সে অকথ্য ভাষায় গালাগাল সহ আমাদের পরিবারের লোকজনকে বেলালের মতো পরিনতি ভোগ করতে হবে বলে জানান। হত্যা মামলাটি তুলে নিতে নানা ভাবে চাপ সৃষ্টি করছেন।

এব্যাপারে মামলার দায়িত্বে থাকা কালারপুল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক আবু হানিফ জানান, আসামীরা পলাতক থাকায় আমরা তাদেরকে আটক করতে পারিনি। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি তাদের আটক করতে। তিনি আরো জানান, একমাস পার হলেও ময়নাতদন্তের রির্পোট এখনো হাতে পাওয়া যায়নি। লাশটির আরেকটি নমুনা ভিসেরা রির্পোটের জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে। আশাকরি কিছু দিনের মধ্যে রির্পোটটি পেয়ে যাব।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print