
সম্প্রতি ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার নাসির নগরে ও সিলেটের মাধবপুরে বিভিন্ন মঠ মন্দিরে হামলা চালিয়ে বিগ্রহ ভাংচুর ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ-লুটপাটও বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রামের উদ্যোগে কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, মঠ-মন্দিরে হামলার আশংকার কথা বার বার প্রশাসনকে অবহিত করার পরও ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার নাসির নগরে ও সিলেটের মাধবপুরে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ না করায় উক্ত সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, চট্টগ্রাম পুজা উৎযাপন পরিষদের যৌথ বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তরা এ কথা বলেন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ক্ষোভের সাথে বলেন, প্রশাসন সচেষ্ট হলে ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার নাসির নগরে সংঘটিত হামলার আগেই সংঘবদ্ধ হামলাকারীদের গ্রেফতার করা যেত এবং সন্ত্রাসী হামলা এড়ানো সম্ভব হত। বার বার এই ধরণের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরেও কেবলমাত্র কিছু সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হলেও ঘটনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের দৃশ্যমান কোন শাস্তি হয় নাই। আমরা জনি বর্তমানে মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। এই সরকারের অধীন কিছু প্রশাসনিক কর্মকর্তার উদাসীনতায় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীরা প্রশ্রয় পাচ্ছে, যা কোনভাবেই কাম্য নয়। মাধবপুর ও নাসির নগরে সংঘঠিত সাম্প্রদায়িক ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বক্তারা ঘটনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

উল্লেখ্য, গত ২৯ অক্টোবর ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার নাসির নগরে ও সিলেটের মাধবপুরে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে হিন্দু জনগোষ্ঠীর প্রায় ১৫টি মঠ, মন্দিরে হামলা চালায় ও বিগ্রহ ভাংচুর ছাড়াও প্রায় ২০০ বাড়ি ঘর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও অত্যাচার-নির্যাতন করে। যা এখনো চলমান রয়েছে।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি প্রকৌশলী পরিমল কান্তি চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এড. নিতাই প্রসাদ ঘোষ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট প্রদীপ কুমার চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইন্দুনন্দন দত্ত, এড. সুভাষ চন্দ্র লালা, সাইফুদ্দিন বাহার, জসিম উদ্দিন, দোলন মজুমদার, বিজয় কুমার বড়–য়া, এড. রুবেল পাল, ধীলন ধর, এড. অনুপম চক্রবর্ত্তী, আশুতোষ সরকার, সাগর মিত্র, শান্তু দাশগুপ্ত, উত্তম বড়ুয়া, মিথুন বড়ুয়া, পান্না তালুকদার, অসীত দাশ, রতন চৌধুরী, বাবুল দে, বিজয় কুমার বৈষ্ণব, দীবেশ নাথ, রিমন মুহুরী, ডা.অশোক দেব, অধ্যাপক শ্রীমান কান্তি ঘোষ, কৃষ্ণ বণিক, মতিলাল দেওয়ানজী, দুলাল চৌধুরী, বাবুল দত্ত, বিশ্বজিৎ পালিত, অনুপ রক্ষিত, সুবাস দাশ, বিকাশ মজুমদার, সুমন দে, এড. কানু রাম শর্মা, রতন সিংহ, রুমা কান্তি সিংহ, রতন চৌধুরী, সিজার বড়ুয়া, দেবাশীষ নাথ দেবু, প্রকাশ দাশ অসি, পঙ্কজ বৈদ্য সুজন, নূপুর ধর, অধ্যক্ষ বিজয় লক্ষ্মী দেবী, উত্তম শর্মা, টিকে সিকদার, সরুপ চৌধুরী, কল্লোল দাশ, দুলাল চৌধুরী, দেবব্রত চৌধুরী, দীপক দেওয়ানজী, প্রদীপ দাশ বাবু, অরবিন্দ বড়ুয়া, সুবল দাশ, সুভাষ চৌধুরী টাংকু, অপু বৈদ্য, বীনা মজুমদার, উদয়ন আচার্য্য, কল্লোল চৌধুরী, তমাল সিকদার, বাপ্পী জলদাস, অধ্যাপক অমল বিকাশ নন্দী, সুকান্ত দত্ত, প্রদীপ দে, সুধীর চন্দ্র নম প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।