
চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগপন্থি চিকিৎসক নেতা ডা. মোহাম্মদ ফয়সাল ইকবাল চৌধুরীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ)-এর চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সালের বিরুদ্ধে আজ রবিবার থেকে এই অনুসন্ধান শুরু করেছে।
তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগেরও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক পদে আছেন।
অনুসন্ধানে ফয়সাল ইকবালের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, নিয়োগ ও বদলী বাণিজ্য, ক্লিনিক ব্যবসা, কমিশন ব্যবসা, করোনাকালীন দুর্নীতিসহ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করা হবে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
দুদক সূত্র জানায়, ডা. ফয়সাল ইকবালের বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে প্রাপ্ত একটি অভিযোগ যাচাই বাছাইয়ের পর কমিশনের নিকট উপস্থাপন করা হলে সেটি অনুসন্ধানের জন্য গৃহীত হয়।
অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদক, চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন অনুসন্ধান শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত সপ্তাহে অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে চিঠি পেলেও মূলত: আজ রবিবার থেকে আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু করেছি। ব্যক্তি বিশেষ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হলেও এর আওতা হবে অনেক বড়। আমরা বিভিন্ন ব্যাংক এবং সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালসহ প্রত্যেকটা দপ্তরে তথ্য চেয়ে চিঠি দেবো। হাসপাতালগুলোর পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদেরও ডাকা হবে তদন্ত কার্যালয়ে। নির্ধারিত সময়ে অনুসন্ধান রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
করোনাকালীন সময়ে পিপিই দুর্নীতি, কোভিড হাসপাতাল হিসেবে চট্টগ্রামের হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালকে প্রস্তুতির নামে শিল্পপতিদের কাছ থেকে ব্যাপক চাঁদাবাজি ও ইমপেরিয়াল হাসপাতাল চালুর জন্য ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির বিষয়টিও অনুসন্ধান করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
চট্টগ্রামে চিকিৎসাখাতে নৈরাজ্যের জন্য বরাবরই দায়ী করা হয় স্থানীয় রাজনীতিতে সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন সমর্থিত ডা. ফয়সাল ইকবালকে। করোনাভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চিকিৎসাক্ষেত্রে নৈরাজ্য তৈরির জন্য বরাবরই সামনে আসছিল বিতর্কিত চিকিৎসক নেতা ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরীর নাম।
গত জুলাই মাসেও একই অভিযোগ উঠে আসে পুলিশের এক গোপন প্রতিবেদনেও। পুরো প্রতিবেদনটিই বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ও স্বাচিপ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মো. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরীকে নিয়ে। গত ১ জুলাই বিশেষ ওই প্রতিবেদনটি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। বিভিন্ন দপ্তর ঘুরে গত ১২ আগস্ট সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে পাঠানো হয়।