
চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা খালের ওপর নয়াহাট সেতু। ২৩ বছর আগে লোহার পাটাতনে তৈরি সেতুটির এখন জরাজীর্ণ অবস্থা। লোহায় মরিচা পড়ে খসে গেছে অনেকাংশ জায়গা। ঝুঁকি নিয়ে তবুও পার হচ্ছে গ্রামের মানুষ।
স্থানীয়রা বলেন, চীনের দুঃখ যদি হয় হুয়াংহো নদী, বোয়ালখালীর দুঃখ যদি হয় কালুরঘাট সেতু, তাহলে সহজেই বলা যায় চরপাথরঘাটাবাসীর দুঃখ ‘নয়াহাট সেতু’।
একই জায়গায় পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী। জানে না, কবে পাকা হবে এই লোহার সেতু। চরপাথরঘাটা মুক্ত বিহঙ্গ ক্লাব সেতুটি পাকা নির্মাণের দাবিতে কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী ও নির্বাহী অফিসার শাহিনা সুলতানা বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেছেন।

১৭ নভেম্বর (মঙ্গলবার) বিকেলে স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও শিল্পপতি লায়ন এমএন ছাফা, মুক্ত বিহঙ্গ ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ সেলিম হক, মুহাম্মদ সেলিম খাঁন, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ফরিদ জুয়েল।
সংগঠনের সভাপতি নাজিম উদ্দিন রিয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সুমনের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে জানিয়েছেন, ১৯৯৭ সালে চসিক তত্বাবধানে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে লােহার পাটাতনে সেতুটি নির্মাণ হয়। দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে চলাচল করছে জনসাধারণ। প্রায় ২০০ ফুট দীর্ঘ এ খালের সেতুর অবস্থা এখন করুন। প্রতিদিন হাজার হাজার লােক যাতায়াত করেন। চরপাথরঘাটার ৫০ হাজার জনগণের একমাত্র সেতু এটি। বর্তমানে সেতুটি অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
যেকোনাে মুহুর্তে ভেঙ্গে পড়তে পারে। এতে হতাহত হওয়ার আশংকা রয়েছে। ফলে একটি পাকা সেতুর অভাবে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গর্ভবতী ও জরুরি রােগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যেতে চরম ভােগান্তি পােহাতে হয়। দীর্ঘ ৩০ বছর সেতুটি নির্মাণে সবাই আশ্বাস দিয়ে আসছেন। কিন্তু এখনাে বাস্তবায়ন না হওয়ায় দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছেন। বর্তমানে সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রামের উন্নয়নে নিরলস ভাবে কাজ করছেন। উন্নয়নের মহাসড়কে যেনো সেতুটির বাস্তবায়ন হয়। সে প্রত্যাশা করেন সংগঠনের নেতারাও।
মুক্ত বিহঙ্গ ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ সেলিম হক বলেন, একই স্থানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবিতে এলাকাবাসী ৩০ বছর ধরেই আন্দোলন করে আসছেন। এর অংশ হিসেবে সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। এখনো এই আন্দোলন অব্যাহত আছে। কিন্তু সেতুটি পাকা নির্মাণ করা হয়নি।
চরপাথরঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান ছাবের আহমেদ বলেন, ‘মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি পাকা করার জন্য আমি দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলীরা বারবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, জনপ্রতিনিধিরা ও আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু সেতুটি পাকা হচ্ছে না। তবে আমি আশাবাদী বর্তমান সরকারের আমলে জনগণ সুফল পাবে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা সুলতানা বলেন, ‘স্মারকলিপি পেয়েছি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। আমরা অবশ্যই চেষ্টা করব সেতুটি পাকা করার জন্য।’