
পাকিস্তানের ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশন বুধবার যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে ৫০তম মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে।
বর্তমানে স্থানীয় করোনা পরিস্থিতির মধ্যে নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাইকমিশন প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয় বলে হাইকমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং ইসলামাবাদে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এ উপলক্ষে চান্সারি প্রাঙ্গণ বিজয় দিবসের ব্যানার, পোস্টার ও অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে সজ্জিত করা হয়।
হাইকমিশনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রবাসীদের উপস্থিতিতে চান্সারি প্রাঙ্গণে হাইকমিশনার মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের সূচনা করেন।
পতাকা উত্তোলনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ও অস্থায়ী জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে বঙ্গবন্ধু ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হাইকমিশনার ও অন্যান্য কর্মকর্তা।
হাইকমিশনার মুজিববর্ষ উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ বিষয়ে আলোকচিত্র, পোস্টার, বই ও প্রকাশনার দুটি পৃথক প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন।
দুপুরে হাইকমিশনারের সভাপতিত্বে বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় হাইকমিশনের কর্মকর্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বাংলাদেশের জন্য এর তাৎপর্য তুলে ধরেন।
হাইকমিশনার রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের এ দিনে দীর্ঘ তেইশ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম, নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙ্গালি জাতি চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। যাত্রা শুরু হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, জাতির পিতা ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, শোষণমুক্ত সমাজ ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে সারা জীবন উৎসর্গ করেছেন। জাতির পিতার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে ‘রূপকল্প ২০২১’ ও ‘রূপকল্প ২০৪১’ অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিগত ১১ বছরে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে এক অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, তথ্য-প্রযুক্তি, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, গ্রামীণ অর্থনীতি ও কূটনীতিসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় উন্নয়ন ঘটেছে।’
হাইকমিশনার জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সকল বিভেদ ভুলে সবাইকে একসাথে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান।
শেষে জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করা হয়।
দিনব্যাপী কর্মসূচির শেষে অতিথিদের দেশীয় সুস্বাদু খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।