
নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর হলো বাংলাদেশ অর্থনীতির চালিকা শক্তি। বর্তমান বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটের ৯৮ শতাংশ বাস্তবায়ন হয় নিজস্ব অর্থায়নে। আমাদের এখন কারো মুখাপেক্ষী হতে হয় না।
আজ রবিবার (২০ ডিসেম্বর) শহীদ মো. ফজলুল রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে আয়োজিত চট্টগ্রাম বন্দর উপদেষ্টা কমিটির ১৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেষে অনুষ্ঠিত প্রেসবিফিংয়ে এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নিজস্ব টাকায় পদ্মা সেতু করছে। পারমাণবিক ক্লাবে যুক্ত হয়েছি আমরা। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর হচ্ছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল হচ্ছে। আগে দেশে মহাসড়ক ছিল না, শেখ হাসিনার নেতৃত্ব হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল কত কিছু হচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন হচ্ছে। বিরাট সম্ভাবনার বাংলাদেশ নেতিবাচক সংবাদ চায় না। শুনতে চায় ইতিবাচক সংবাদ। নেতিবাচক সংবাদ মানুষকে হতাশ করে। মানুষ এখন আশাবাদী। এখন নিয়োগের ক্ষেত্রে জাল করে ধরা পড়ে। আগে নিয়োগ হয়ে যেত। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবো।
তিনি বলেন, বে-টার্মিনালে অনেক আগ্রহী বিদেশি বিনিয়োগকারী আছে। সমঝোতা হলে চূড়ান্ত হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, বন্দরের এ বার্ষিক সভা নিয়মিত হওয়ার দরকার। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন সম্পর্কে জানা যায়। পাশাপাশি বন্দরের কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত হয়ে এর সমস্যা সমাধানের বিষয়ে পরিকল্পনা নেয়া যায়। ২০১৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর এটি আমাদের দ্বিতীয় সভা। গত সভায় আলোচিত প্রায় সমস্যা চট্টগ্রাম বন্দর ইতোমধ্যে সমাধান করতে সক্ষম হয়েছে।’
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলমের সঞ্চালনায় সভায় আরো অংশগ্রহণ করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী সহ চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত সকল সংসদ সদস্য, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ, কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম. জহিরুল আলম দোভাষ, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি একেএম আলতাফ হোসেন, নুরুল কাইয়ুম খান, বিজিএমইএর নাসিরুদ্দিন চৌধুরী, সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিন, বাফার পরিচালক খায়রুল আলম সুজন ও চট্টগ্রাম বন্দরের সকল স্টেকহোল্ডার।
এছাড়াও জুম অ্যাপে সভায় অংশ নেন বিকেএমইএ’র মো. হাতেম, মো. সিদ্দিকুর রহমান, রেজাউল করিম, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক রফিক আহমেদ প্রমুখ।
জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দর উপদেষ্টা কমিটির সভা নিয়মানুযায়ী প্রতি তিন মাসে একবার করে আয়োজন করার কথা থাকলেও সেটি মানা হচ্ছে না। সর্বশেষ কমিটির সভা হয়েছিল গত বছরের সেপ্টেম্বরে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ১৪তম সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হওয়ায় তা স্থগিত হয়ে যায়। আজ ১৫ মাস পর অনুষ্ঠিত হয় আজকের এই সভা।
বন্দর সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা কমিটির ১৩তম সভা হয়। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় বে টার্মিনাল, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল, বন্দরের কনটেইনার জট, নিলামযোগ্য কনটেইনার দ্রুত স্থানান্তরসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করে বন্দর ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে বেশ কিছু সুপারিশ প্রণয়ন করা হয়। বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত ও সুপারিশের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়।