
ইবিএম মেশিন ভাঙচুর, ককেটল বিস্ফোরণ, দুই প্রার্থীর মধ্যে হাতাহাতিসহ কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পৌরসভার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সােমবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ৮ থেকে শুরু হয়েছে ভোট গ্রহণ। চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এ নির্বাচনে প্রায় ৩৫ হাজার ভােটার ১৩ জন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন।
আরও খবর: কড়া নিরাপত্তায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে সীতাকুণ্ড পৌর নির্বাচন
সকালে প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তায় শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ শুরু হলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডে আলম সফি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রবেশ করে ইবিএম মেশির ভাঙচুরের অভিযোগ উঠে স্থানীয় ছাত্রলীগ নামধারীদের বিরুদ্ধে। এর আগে কেন্দ্রের দক্ষিণ পাশে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনা তারা। এসময় ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিল্টন রায় বলেন, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ‘আমরা শুনেছি, একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। কেন্দ্রে পর্যাপ্ত ফোর্স আছে।
এদিকে সকালে ভোট গ্রহণের শুরুতেই সীতাকুণ্ড আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সকাল ১০টার দিকে ১নং ওয়ার্ডে গোলাগুলির আওয়াজ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা।
এছাড়াও সীতাকুণ্ড ডিগ্রি কলেজ, এয়াকুব নগর এলাকায় ভোটারদের কেন্দ্রে বাধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিএনপি মনোনিত (ধানের শীষ) প্রতীকে মেয়র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল মুনসুরের একজন এজেন্ট অভিযোগ করেন সকালে ভোট গ্রহণ শুরুর পর বহিরাগত বাঁশবাড়িয়ার ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শওকত আলী তার দলবল নিয়ে সীতাকুণ্ড ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে এসে চিৎকার করে বলেন বিএনপির এজেন্টরা এখনো কিভাবে কেন্দ্রে অবস্থান করছে..? এর পরপরই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কেন্দ্র থেকে জোর করে ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে দেয়। প্রশাসনকে অভিযোগ দেয়ার পরও কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
এদিকে প্রথমবারের মত ইলেকট্রনিক ভােটিং মেশিনে (ইভিএম) সীতাকুণ্ড পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনে বেলা বাড়ার সাথে সাথে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারের ভিড় লক্ষ করা গেছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে বিপুল নারী ও পুরুষকে ভোট দিতে দেখা গেছে একই সাথে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুরুষ ও মহিলা ভোটারদের দীর্ঘ লাইন লক্ষ করা গেছে।
নির্বাচনের আচরণবিধি দেখাভালের জন্য মাঠে কাজ করছেন ৯ ম্যাজিস্ট্রেট ১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। এই পৌরসভা।নির্বাচনে নয়টি সাধারণ ওয়ার্ডের ৩৬ জন প্রার্থী এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১৩ জন মহিলা প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২৭ টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার রয়েছে ৩৪ হাজার ৮১৩জন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুণ্ড পৌরসভা নির্বাচনে মােট ১৩টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেয়র পদে তিনজন এবং কাউন্সিলর পদে (সাধারণ ও সংরক্ষিত) মােট ৭৫ জন প্রার্থী পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে, ১৩টি পদেই একক প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। এছাড়া ৪-৫ জন জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের প্রার্থীও নির্বাচন করছেন। আর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ মেয়র পদে একক প্রার্থী দিলেও কাউন্সিলর পদে প্রত্যেক ওয়ার্ডে ৪-৫ জন কিংবা তারও বেশি নেতাকর্মী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুণ্ড পৌরসভায় মােট ভােটার সংখ্যা ৩৪ হাজার ৮১৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভােটার ১৭ হাজার ৮২৭ জন ও মহিলা ভােটার ১৬ হাজার ৯৮৬ জন। ৯টি ওয়ার্ডে ভােট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৭টি।
পৌরসভা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার বুলবুল আহমেদ বলেন, শান্তিুপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখানে ১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি-আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যা দায়িত্ব পালন করছেন।