ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

স্বাধীনতার ৫০ বছরের মাথায় প্রকাশ পেল শফি মিয়ার বীর গাঁথা কাহিনী

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

এনাম হায়দার:

পাকিস্তান সেনা বাহিনীর একজন সৈনিক ছিলেন শফি মিয়া। মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ শুরু হলে জীবন বাজি রেখে সরাসরি অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধে। সেই যুদ্ধে তার ভাগ্যে কি হয়েছে সে খবর আর পায়নি কেউই। যুদ্ধ শেষের ৫০ বছরের মাথায় এসে স্বজনরা জানতে পারলেন শফি মিয়ার বীরগাথা। যে কাহিনী শফি মিয়ার বিয়োগ ব্যাথা ছাপিয়ে গর্বের ইতিহাস হয়ে উঠে তাঁর স্বজনদের কাছে।

১৯৭১ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে রংপুর পলাশবাড়িতে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন শফি মিয়া।

১৯৭১ সালে পহেলা এপ্রিল পাক সেনা বাহিনীর হাতে শহীদ (সেনা বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন) মো: শফি মায়ার খোঁজ পেল স্বজনরা দীর্ঘ ৫০ বছর স্বজনরা কেউ জানতে পারেনি এই শহীদকে কোথায় কবর দেওয়া হয়েছিল। তবে এতো বছর পর শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়ায় ধন্যবাদ জানান সরকারকে ।

শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি মায়া জন্ম চট্টগ্রাম হাটহাজারী উপজেলার কাটির হাট পশ্চিম ধলই বদল বাড়ী । পিতা মরহুম নজির আহমেদ সওদাগর এর ৫ ছেলে সন্তান,২ কন্যা সন্তানের মধ্যে শহীদ শফি মায়া বড় সন্তান ।জন্ম ২০ শে মে ১৯৩৬ সালে ।মাত্র ২২ বছর বয়সে ২০শে মে ১৯৫৮ সালে পাকিস্হান সেনাবাহিনী ২৯ রেজিমেন্ট রংপুর সেনানিবাসে যোগদান করেন ।

৭ই মার্চ ১৯৭১ বাঙালী জাতির ইতিহাসে প্রথম বারের জন্য স্বাধীনতার শ্রোগান দিল বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো,বাংলাদেশ স্বাধীন করো। শুরু হলো অসহযোগ আন্দোলন। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্হানি হানাদার বাহিনী ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালীর ওপর আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ।শুরু করে ইতিহাসের নির্মম হত্যাযজ্ঞ। ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধে উত্তাল সারা দেশ ।স্বাধীনতার আকাঙ্খায় মুক্তি পাগল বাঙালী,সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত ।ঠিক সেসময় সারাদেশের ন্যয় রংপুর পলাশবাড়ী এলাকায় পাক সেনা-রাজাকারদের সহায়তায় একের পর এক চালায় হত্যা,গণহত্যাপাক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধে নেমে ২৯ রেজিমেন্ট রংপুর সেনানিবাসে কর্মরত অনেকেই ।তথ্য উপাত্ত থেকে জানা যায় সেনা বাহিনীতে কর্মরত শফি মায়া সেনাবিহীনিতে স্বয়ংক্রিয় কামান ট্যাংক চালাতেন। সাহসী সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি মিয়া রংপুর সেনানিবাসে কর্মরত থাকাকালিন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে যুদ্ধে নেমে পড়েন। পাক সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করতে স্বাধীনতা যুদ্ধে ৬নং সেক্টরে অংশ নেন। রংপুর পলাশবাড়ীর আশে পাশের অনেক এলাকায় সম্মুখ যুদ্ধে পাক বাহিনীকে পরাস্ত করেন। ২৯ রেজিমেন্টে রংপুর সেনানিবাসে কর্মরত থাকাকালীন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করায় ১৯৭১ সালের ৩১শে মার্চ বুধবার মধ্যরাতে পাক বাহিনীর সৈন্যরা শহীদ শফি মিয়াকে বন্ধি করে ক্যাম্পে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালায়। ১লা এপ্রিল ১৯৭১ বৃহস্পতিবার রংপুর পলাশবাড়ি স্হানে নির্মম ভাবে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে শহীদ শফি মিয়াকে ।একই সাথে শহীদ হন আব্দুস সালাম,আজিজুল হক সহ অনেক সেনা কর্মকর্তা ।শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধারকে কোথায় কবরস্হ করা হয়েছে স্বাধীনতার এতো বছর পরেও এখনো জানেনা স্বজনরা।

সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয় -সশস্ত্র বাহিনী শহীদ গেজেট বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট এর পক্ষ থেকে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি মিয়ার স্বজনদেন সাথে দেখা করেন । শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির কাগজ পত্র দেন স্বজরদের হাতে।

শহীদ শফির মিয়ার ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজল বারীর বড় সন্তান আজিজুল হক জেঠার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে জেঠা শহীদ সফি মিয়া এবং পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজল বারী মহান মুক্তিযোদ্ধে অংশ নেন, যুদ্ধ শেষে পিতা বীর বেশে বাড়ী ফিরে আসলেও ফিরে আসেনি জেঠা শফি মিয়া। আমার জেঠা শহীদ শফি মিয়া জাতির একজন শ্রেষ্ট সন্তান ।স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন।সেটা আমাদের গর্ব ।আমরা খোঁজ পাইনি দীর্ঘ ৪ যুগ। পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজর বারী বড় ভাইয়ের খোঁজে প্রশাসনের ধারে ধারে ঘুরেও মিলেনি বড় ভাইয়ের খোঁজ। স্বীকৃতি পাননি শহীদ মুক্তিযোদ্ধার। শুনেছি তাকে কবরস্হ করা হয়েছিল বগুরার পলাশ বাড়ীতে ।এতোবছর পরে হলেও রাষ্ট্র শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বজনদের খোঁজ নিল-স্বীকৃতি প্রদান করলো –সেটাই অনেক বড় পাওয়া ।শহীদ শফি মিয়ার কবরের সন্ধান পেতে রাষ্ট্রের সহযোগীতা কামনা করেন।

লেখকঃ এনাম হায়দার, ক্যামেরাপার্সন, এনটিভি, চট্টগ্রাম অফিস।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print