
মামলার কথা বলে মক্কেল সেজে এক আইনজীবিকে কৌশলে বাসায় ঢেকে নিয়ে জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা আদায়ের চেষ্টার অভিযোগে নগরীর ভয়ঙ্কর প্রতারক চক্রের হোতা সোনিয়াসহ তার এক সহযোগী গ্রেফতার করেছে ডবলমুরিং থানা পুলিশ। এসময় জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে চট্টগ্রাম জজ কোর্টের আইনজীবী আইনজীবী হাবিবুর রহমান আজাদকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) রাতে নগরীর মৌলভীপাড়ার ইউসুফ হাজী বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, একটি মামলার বিষয়ে কথা আছে বলে নগরীর চৌমুহনী এলাকায় আইনজীবির সাথে দেখা করে সোনিয়া। এক পর্যায়ে সেখান থেকে মৌলভীপাড়ার বাসায় যেতে বলে। আইনজীবী সেই বাসায় যাওয়ার পর তিন যুবক তাকে আটক করে রাখে। তারা তার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। অন্যথায় প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ওই আইনজীবি কৌশলে ডবলমুরিং থানায় ফোন করে তাকে প্রতারক চক্রের কবল থেকে উদ্ধারের অনুরোধ করে। খবর পেয়ে গতকাল রাতে আগ্রাবাদ মৌলভীপাড়া ইউসুফ হাজীর বাড়ীর জাহেদের বসত ঘরের নীচ তলার একটি কক্ষ থেকে ভয়ঙ্কর নারী প্রতারক চক্রের হোতা জোবাইদা সুলতানা হীরা ওরফে সোনিয়া (২৫)কে সহযোগী ইমরানসহ গ্রেফতার করে। এসময় সেই ঘর থেকে জিম্মি অবস্থায় এ্যাডভোকেট এস.এইচ.এম হাবিবুর রহমান আজাদ (৫২)কে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার সোনিয়ার বিরুদ্ধে একটি হত্যাসহ তিনটি মামলা রয়েছে। ইমরানও তিন মামলার আসামি।
ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন পাঠক ডট নিউজকে বলেন, সোনিয়া সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের প্রধান। তার গ্রুপে আরও চারজন ছেলেও আছে। সোনিয়া প্রেমের অভিনয় করে ছেলেদের নিজ ঘরে নিয়ে আসে। এরপর চক্রের বাকি সদস্যরা অশ্লীল ছবি তুলে জিম্মি করে টাকা আদায় করে। যারা ছবি দেখেও টাকা দেয় না তাদের মারধর করে এমনকি প্রাণনাশেরও হুমকি দেয়। তাদের হাতে এভাবে জিম্মি অবস্থায় ২০১৩ সালে একজন মারা যায়। গতকালও এডভোকেট হাবিবকে একটি মামলার বিষয়ে কথা আছে বলে চৌমুহনী দেখা করে সোনিয়া। এক পর্যায়ে সেখান থেকে মৌলভীপাড়া বাসায় যেতে বলে। এডভোকেট হাবিবও তার কথায় বাসায় যান। কিন্তু বাসায় যাওয়া মাত্রই আরও তিন যুবক তাকে আটক করে ফেলে। তারা তার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। অন্যথায় প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এসময় হাবিব কৌশলে থানায় ফোন করেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে সোনিয়া কে গ্রেফতার করে। তবে বাকিরা পুলিশ আসার আগেই পালিয়ে যায়। পরে অভিযান চালিয়ে ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোনিয়া জানায়, গত ১০ বছরে কমপক্ষে ৫০টি জিম্মির ঘটনা ঘটিয়েছে তার চক্র। গ্রেফতার সোনিয়ার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় ৩ টি মামলা রয়েছে। এছাড়া চক্রে জড়িত প্রত্যেকেই ২ থেকে ৩ মামলার আসামি।