ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

মমতা কী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন?

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

বুধবার সকালে কলকাতার রাজভবনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন মমতা ব্যানার্জী। এই নিয়ে টানা তৃতীয়বার।

কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেই তিনি রাজনীতির ইনিংস শেষ করবেন, নাকি দিল্লিতেও তাকে একদিন প্রধানমন্ত্রীত্বের সিরিয়াস দাবিদার হিসেবে দেখা যাবে – এই প্রশ্নটা আবার নতুন করে উঠতে শুরু করেছে।

পশ্চিমবঙ্গ দখলে মরিয়া বিজেপিকে যেভাবে তিনি পর্যুদস্ত করে হারিয়েছেন, তাতে অনেকেই মনে করছেন আগামী সাধারণ নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনিই হতে পারেন যোগ্যতম মুখ।

তৃণমূল কংগ্রেসের সিনিয়র এমপি কাকলি ঘোষদস্তিদার বলেন, তার দল মমতা ব্যানার্জীকে একদিন অবশ্যই ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আসনে দেখতে চায়।

বিবিসিকে তিনি বলছিলেন, ‘মমতা একেবারে শূন্য থেকে উঠে এসেছেন শুধু নিজের দৃঢ়তা, দক্ষতা আর প্রশাসনিক সামর্থ্যের জোরে। মোদির চ্যালেঞ্জার হয়ে ওঠার মতো সব যোগ্যতাই তার আছে – তবে বিষয়টা নিয়ে দলে এখনো আলোচনা হয়নি।’

‘কিন্তু তৃণমূলের নেত্রী একদিন যে অবশ্যই ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, সেটা আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি।’

দিল্লিতে সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার সোমা চৌধুরী আবার বলছিলেন, মমতা প্রধানমন্ত্রীত্বের দৌড়ে নামতে পারবেন কি না সেটার পূর্বাভাস করা কঠিন – তবে এই মুহূর্তে ভারতে রাজনৈতিকভাবে যে ‘ফ্লুয়িড’ পরিস্থিতি চলছে তাতে সেটা হয়তো একেবারে অসম্ভবও নয়।

সোমা চৌধুরীর কথায়, ‘উদ্ধব ঠাকরে থেকে শুরু করে অখিলেশ যাদব – বহু বিরোধী নেতার সাথেই তার সুসম্পর্ক আছে। ফলে ২০২৪ নির্বাচনের আগে যদি কোনো বিজেপি-বিরোধী জোট সত্যিই গড়ে ওঠে, তাহলে সেই জোটের মুখ হিসেবে মমতা ব্যানার্জীকে দেখা যেতেই পারে।’

‘তবে কংগ্রেস নেতৃত্বের সাথে তার সুসম্পর্ক নেই, এটাও সুবিদিত। কাজেই কংগ্রেস তার কাছে কতটা নতি স্বীকার করতে রাজি হয়, সেটাও দেখার বিষয়।’

তবে এই মুহূর্তে কোভিড মহামারী সামলাতে কেন্দ্রীয় সরকারের সার্বিক ব্যর্থতা মমতা ব্যানার্জীর জন্য দিল্লির পথ সুগম করে তুলতে পারে বলেও সোমা চৌধুরীর ধারণা।

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলছিলেন, “২০১৪ সালের নির্বাচন থেকেই ভারতে যে প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচন ধাঁচের নির্বাচনী প্রবণতা শুরু হয়েছে, সেটার এবার অবসান হতে পারে। একজন ‘সেভিয়ার লিডার’ বা রক্ষাকর্তা নেতাই আমাদের সব বিপদ থেকে বাঁচাবেন, সেই ভাবনার সাথে রোমান্স হয়তো এবার শেষ হবে।”

“সে ক্ষেত্রে মানুষ মুখ পাল্টাতে আবার কোয়ালিশন বা জোট রাজনীতির ওপর ভরসা রাখতেই পারেন, আর সেখানে মমতা ব্যানার্জীর নাম জোটের নেত্রী হিসেবে উঠে আসতেই পারে। তবে হ্যাঁ, এই অঙ্কেও অনেক ‘কিন্তু আর যদি’ থেকেই যাচ্ছে।”

কলকাতায় প্রবীণ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক ও অধ্যাপক অমিত ভট্টাচার্য আবার মনে করেন, মমতা ব্যানার্জির দিল্লিমুখী হওয়াটা মোটেই ঠিক হবে না।

‘জানি না তিনি কী করবেন। তবে আমার মতে তিনি যেখানে আছেন সেখানে থাকাটাই বোধ হয় ভালো। সর্বভারতীয় স্তরে রাজনীতি করার জন্য যে ধরনের মতাদর্শ, কর্মসূচি বা লক্ষ্য দরকার সেটা তৃণমূলের আছে বলে তো মনে হয় না,’ বিবিসিকে বলছিলেন অমিত ভট্টাচার্য।

তিনি আরো যোগ করেন, ‘প্রধানমন্ত্রীত্বের ভাবনা ভাবাটা আসলে এখন সুদূরপ্রসারী চিন্তা। তার বরং পশ্চিমবঙ্গেই মনোনিবেশ করা উচিত – এ রাজ্যের যুবকদের চাকরি-বাকরি, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা উচিত। মাসোয়ারা, কার্ড – এসব দিয়ে আর কতদিন চলবে?’

২০১১ সালে যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় এসেছিলেন তার বেশির ভাগই অপূর্ণ রয়ে গেছে, সে কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন অমিত ভট্টাচার্য। যেমন, পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি আজও সম্ভব হয়নি।

মমতা ব্যানার্জীর প্রধানমন্ত্রী পদে তুলে ধরার ক্ষেত্রে আর একটা সমস্যা হলো, তিনি বরাবরই আঞ্চলিকতা বা প্রাদেশিকতার রাজনীতির জন্যই দিল্লিতে পরিচিত।

দু’দফায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় তিনি শুধু পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন রেল প্রকল্পের দিকেই নজর দিয়েছেন, বাকি দেশের কথা ভাবেননি – এই অভিযোগও বারে বারেই উঠেছে।

কাকলি ঘোষদস্তিদার অবশ্য বলছিলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারে সিনিয়র ক্যাবিনেট মন্ত্রী হিসেবে তাকে গোটা দেশের সমস্যাই সামলাতে হয়েছে, সারা ভারতের ইস্যুগুলো নিয়ে মাথা ঘামাতে হয়েছে। কাজেই তিনি শুধু বাংলার জন্য কাজ করেছেন, এই অভিযোগ বিশ্বাস্য নয়!’

মমতা ব্যানার্জী ভারতের একটি অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে ক্রমশ ‘স্টেটসম্যান’ হয়ে উঠেছেন, ইতিমধ্যেই জাতীয় স্তরের নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন – নানা দৃষ্টান্ত দিয়ে এটাও বোঝানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল।

‘এই যেমন দেখুন, নির্বাচনে জিতেই তিনি সারা দেশের মানুষের জন্য বিনামূল্যে কোভিড টিকা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। শুধু পশ্চিমবঙ্গের জন্য বিনামূল্যে টিকা চাননি কিন্তু,’ বলছিলেন কাকলি ঘোষদস্তিদার।

তবে সার্থক ‘স্টেটসম্যান’ হয়ে উঠতে গেলে তাকে তিস্তা চুক্তি বা আরো বহু ইস্যুতেই আঞ্চলিকতার রাজনীতি ছাড়তে হবে এবং আন্তর্জাতিক অগ্রাধিকারগুলো দেখতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন অমিত ভট্টাচার্য।

মমতা ব্যানার্জীর খুব প্রিয় একটা রাজনৈতিক স্লোগান আছে, ‘হামসে যো টকরায়েগা, চুরচুর হো জায়েগা।’ অর্থাৎ, আমাদের সাথে টক্কর নিতে এলে চুরমার হয়ে যাবে!

হিন্দিভাষী এলাকায় তো বটেই, এমনকি একশো ভাগ বাঙালি এলাকায় প্রচারে গিয়েও তিনি এই স্লোগানটা প্রায়শই দেন।

অনেকেই বলেন, আগে অস্বাচ্ছন্দ্য থাকলেও তিনি যে ইদানীং প্রায়ই হিন্দিতে ভাষণ দেন কিংবা মিডিয়াকে সাক্ষাৎকার দেন – সেটাও তার সর্বভারতীয় রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশের একটা আভাস।

সে ক্ষেত্রে হয়তো ভারতে ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনকে লক্ষ্য করেই তাকে এগোতে হবে- এমন কী পুরোপুরি জাতীয় রাজনীতিতে মনোনিবেশ করতে হলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রিত্বও মাঝপথে ছেড়ে দিতে হতে পারে বলে পর্যবেক্ষকদের অনুমান।

কিন্তু আপাতত পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে ‘চুরচুর’ করার পর জাতীয় স্তরেও বিজেপি-বধ করার জন্য এই মুহূর্তে তিনিই যে বিরোধী শিবিরের সেরা বাজি, তাতে কোনো সন্দেহ নেই বললেই চলে।

সূত্র : বিবিসি

সর্বশেষ

০৯ নং ওয়ার্ড জাসাস কমিটি অনুমোদিত

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ৪৭ বছর ⦿বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print