ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

চট্টগ্রামে কোভিড আক্রান্তদের শরীরে ৮৮ শতাংশ এন্টিবডির উপস্থিতি রয়েছে

ফাইল ছবি।

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

ফাইল ছবি।

চট্টগ্রামে চিকিৎসকদের এক গবেষণায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর শরীরে মধ্যে আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ হওয়া ৮৮ শতাংশ প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। বিপরীতে নেগেটিভ হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ২৬ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।

বিশেষভাবে আরটিপিসিআর পজিটিভ রোগীদের প্রায় ৯০ শতাংশের শরীরে এন্টিবডি পাওয়া গিয়েছে। এছাডাও আরটিপিসিআর নেগেটিভ এমন ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ২৬ শতাংশের শরীরে এন্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। গবেষণার ফলাফল বলছে, এই অ্যান্টিবডি তাদের শরীরে নয় মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

কোভিড-১৯ আক্রান্ত ও উপসর্গযুক্ত রোগীদের শরীরে কোভিড-১৯ বিরোধী এন্টিবডির উপস্থিতি ও এর স্থায়ীত্ব অনুসন্ধান করার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা এ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

২০২০ সালের অক্টোবর মাসে শুরু হয়ে এপ্রিল ২০২১ পর্যন্ত প্রায় সাত মাস যাবৎ চলমান এ গবেষণায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের ১৫৩০ জন (আরটিপিসিআর পজিটিভ-৯৪১ ; আরটিপিসিআর নেগেটিভ-৫৮৯) ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

শিল্প প্রতিষ্ঠান এস.আলম গ্রুপ ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অধিকাংশ পুরুষ (৭৫ শতাংশ) এবং চাকুরিজীবি (৭০ শতাংশ)। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর তাদের প্রধান লক্ষণগুলো ছিলো জ্বর (৯২ শতাংশ), কাশি (৬৩ শতাংশ), ঘ্রাণশক্তি লোপ (৫২ শতাংশ)। এছাড়াও গলাব্যথা, মাথাব্যথা, পাতলা পায়খানা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ দেখা গিয়েছে। আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর অনেকেই আগে থেকে ডায়াবেটিস (১৫ শতাংশ), উচ্চ রক্তচাপ (২৩ শতাংশ), শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা (৯ শতাংশ), হৃদরোগ ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ছিল। কোভিড থেকে সুস্থ হওয়ার পরে তাদের প্রায় ৫৭ শতাংশের কোন না কোন উপসর্গ দীর্ঘদিন যাবৎ বিদ্যমান ছিল। তন্মধ্যে শারীরিক দুর্বলতা, ব্যাথা, দুশ্চিন্তা, অবসাদ, কাশি, চুল পড়ে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ উল্লেখযোগ্য।

একই সাথে রোগীদের আর্থসামাজিক অবস্থা, কোভিড আক্রান্ত হওয়ার সময় তাদের মধ্যে কি কি উপসর্গ বিদ্যমান ছিল এবং কোভিড থেকে সুস্থ হওয়ার পরও কোন ধরনের দীর্ঘ মেয়াদি জটিলতা রয়ে গেছে কিনা এসব তথ্য আহরণ করা ছিল এ গবেষনার অন্যতম উদ্দেশ্যসমূহ।
গবেষক দলের প্রধান ডাঃ মোঃ আব্দুর রব বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ কোভিড রোগিদের চিকিৎসা দিয়ে আসছি। কোভিড-১৯ কে আরো বিষদভাবে জানার লক্ষ্যে রোগীদের লক্ষণ, সেরে ওঠার পর দীর্ঘ্যমেয়াদি জটিলতা এবং এন্টিবডির উপস্থিতি নিয়ে এই গবেষণা অত্যন্ত সময়োপযোগী।

গবেষণা কর্মটির সমন্বয়ক ডাঃ মোহাম্মদ আসিফ খান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের দেশের বাস্তবতায় চিকিৎসা বিজ্ঞানকে উন্নত করার জন্য এ ধরনের গবেষণার কোন বিকল্প নেই। আমাদের জানামতে জেলা পর্যায়ের কোন হাসপাতালে নিজস্ব উদ্যোগে পরিচালিত গবেষণার এটিই প্রথম উদাহরণ। আমরা আশা করি, আমাদের এই উদ্যোগ চিকিৎসা ক্ষেত্রে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত গবেষণা কর্মকে উৎসাহিত করবে

সংগৃহীত তথ্যের আলোকে ডাঃ এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, এই গবেষণার অন্যতম সাফল্য হল আক্রান্ত রোগিদের একটি বৃহৎ অংশকে এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং তাদের কে সরাসরি ইন্টারভিউ ও পরীক্ষার মাধ্যমে তথ্যগুলো সংগৃহীত হয়েছে। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল সরকারের চলমান কোভিড-১৯ টীকা কর্মসূচীকে আরো গ্রহণযোগ্য ও গতিশীল করবে।

তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ডাঃ এম এ কবির চৌধুরী জানান, গবেষণায় সংগৃহীত তথ্য ও উপাত্তসমূহ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমরা গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পেয়েছি, যেমন ৬ মাসের অধিক সময় পর্যন্ত আরটিপিসিআর পজিটিভ রোগীদের শরীরে আ্যান্টিবডির উপস্থিতি। এ সকল তথ্যসমূহ আরো বিশদে বিশ্লেষণ করে আমরা যথাযথভাবে আন্তর্জাতিক জার্নালে উপস্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। যা কোভিড-১৯ সংক্রান্ত গবেষণায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের অবস্থানকে সমুন্নত করবে।

এদিকে আজ ৮ মে শনিবার বিকেলে জেনারেল হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর শরীরে এন্টিবডির উপস্থিতি সংক্রান্ত সেরো-প্রিভ্যালেন্স ক্রস বিভাগীয় গবেষণা ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি।

তিনি বলেন, বলেন, দেশে করোনা ভাইরাস আসার পর চট্টগ্রামে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য সর্বপ্রথম একমাত্র ভরসাস্থল ছিল চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল। প্রথমাবস্থায় কোভিড আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য এ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট থাকলেও বর্তমানে পরিপূর্ণ। চট্টগ্রামে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের শরীরে এন্টিবডির উপস্থিতি সংক্রান্তে জেনারেল হাসপাতালে গবেষণা কার্যক্রম দেশে এই প্রথম। অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কোভিড রোগীদের শরীরে এন্টিবডির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকগণের ক্রস বিভাগীয় গবেষণাটি সত্যিই প্রশংসার দাবীদার। এন্টিবডি গবেষণায় ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম আরও অনেকদূর এগিয়ে যাবে।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ও জেনারেল হাসপাতালের তত্তাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বির সভাপতিত্বে ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ডা. এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এন্টিবডি গবেষণা ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর ও বিএমএ সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক খান।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খান। আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ও করোনা ফোকাল পার্সন ডাঃ মোঃ আব্দুর রব, সহকারী সার্জন ডাঃ অমি দেব ও সিনিয়র পুষ্টি কর্মকর্তা ডাঃ মোরতাহিনা রশিদ।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. উখ্য উইন, সিনিয়র কনসালট্যান্ট (ইএনটি) ডা. আশফাক আহমেদ, সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ শহীদুল ইসলাম, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হুছাইন মুহাম্মদ ও জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকগণ।

সর্বশেষ

০৯ নং ওয়ার্ড জাসাস কমিটি অনুমোদিত

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ৪৭ বছর ⦿বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print