
জালিয়াতির মাধ্যমে কর্মচারীদের বেতন থেকে দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে বাংলাদেশ রেলওয়ে’র (পূর্বাঞ্চল) হিসাব বিভাগে জুনিয়র অডিটর ফয়সাল মাহবুবকে আটক করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার (৮ মে) রাতে ফয়সাল মাহবুবকে আটক করেছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)। বর্তমানে তিনি রেলওয়ে নিরাপত্তা জেনারেলের চৌকিতে ওই বাহিনীর হেফাজতেই রয়েছেন।
ফয়সাল মাহবুব রেলওয়ের পাহাড়তলী অর্থ ও হিসাব শাখায় কর্মরত ছিলেন। ২০১২ সালে জুনিয়র হিসাব কর্মকর্তা হিসেবে ফয়সাল মাহমুদ রেলওয়ে যোগদান করেন। তার বাসা নগরীর খুলশি এলাকায়। তার বাবা লুৎফুর রহমানও রেলওয়ের সাবেক কর্মকর্তা।

তার আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী চট্টগ্রামের কমান্ড্যান্ড মো. শফিকুল ইসলাম জানান, বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জুনিয়র অডিটর ফয়সালকে আমরা আটক করেছি। প্রাথমিকভাবে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি শনাক্ত হয়েছে। কত টাকা সরিযেছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে জানতে রেলের অতিরিক্ত ফ্যাইন্যান্স উপদেষ্টার যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। খবর নিয়ে জানাতে হবে।
রেলের একাধিক সূত্র জানায় ২০২০ সালের শুরু থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত কর্মচারীদের বেতন জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নেন ফয়সাল। বিষয়টি নজরে আসলে শনিবার ডেপুটি ফিন্যান্সিয়াল অ্যাডভাইজার মো. শাহজাহান রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান অর্থ ও হিসাব কর্মকর্তা কামরুন্নাহার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত ফয়সালকে আটক করে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী। দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ থাকলেও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ফয়সাল ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেন। সে জানান, আত্মসাৎ করা টাকার কিছু অংশ তিনি তার তৃতীয় স্ত্রী রাবেয়া আক্তার টুম্পাকে দিয়েছেন জায়গা কেনার জন্য। বাকি টাকা ব্যয় করেছেন অনলাইনে জুয়া খেলে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ রবিবার (৯ মে) রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে বসেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান অর্থ ও হিসাব কর্মকর্তা কামরুন্নাহারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।
রেলওয়ে পাহাড়তলী হিসাব শাখার ডেপুটি ফিনান্সিয়াল অ্যাডভাইজার মো. শাহজাহান বলেন, ফয়সাল মাহবুব হিসাবে বিভাগের জুনিয়র অডিটর হিসাবে কর্মরত আছেন। আর এ সুযোগেই ২০২০ সালের শুরু থেকে চলতি মে মাস পর্যন্ত কর্মচারীদের বেতন থেকে পাসওয়ার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়েছেন দেড় কোটি টাকা।
এই কর্মকর্তা জানান, আসলে কত টাকা সরিয়েছে সেটা নিয়ে কনফিউশান আছে। আমরা ধারণা করছি আড়াই কোটি টাকা মতো চুরি হয়েছে। তবে সে ৫০ লাখ টাকার কথা স্বীকার করেছে। বাকিটা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।