
পরিকল্পনা ছিল চট্টগ্রাম মহানগরীর জুবিলী রোড এলাকায় অবস্থিত মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে চুরির। কিন্তু সে চেষ্টা ব্যার্থ হলেও একই ভবনে বাংলাদেশ সাপ্লাইয়ার্স নামক অপর একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা চুরি করেছে পেশাদার একটি চোর চক্র। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশের হাতে আটক হয়েছে চোরের দলের ৩ জন। উদ্ধার হয়েছে লুণ্ঠিত টাকা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- টাংকি পাহাড় শান্তিনগর জি-ব্লকের মৃত মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে মো.মনির হোসেন ও তার স্ত্রী খুকু মনি প্রকাশ খুকি বেগম (২৮), চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার চাঁনপাড়া এলাকার মো. আজিজের ছেলে মো. মাহফুজ।
আজ শনিবার (২২ মে) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) দক্ষিণ বিভাগের অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপ-কমিশনার বিজয় বসাক। তিনি বলেন, গত শুক্রবার রাতে কোতোয়ালী থানাধীন পুরাতন রেলস্টেশনস্থ গাউছিয়া সাইকেল মার্টের বিপরীত পাশে গ্রামীণ মাঠের প্রবেশমুখে রাস্তার চুরির ঘটনায় জড়িত সিএনজি অটোরিকশা ড্রাইভার মাহফুজকে (৩০) গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে নগদ ৫ হাজার টাকা ও ২টি চাপাতি জব্দ করা হয়।
গ্রেফতার মো.মনির হোসেন দীর্ঘ ৭ বছর ধরে চুরি পেশায় জড়িত এবং এসময় প্রায় ২০০ থেকে ২৫০টি চুরির সাথে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে।
তিনি জানান, গ্রেফতার অটোরিকশা ড্রাইভার মাহফুজের তথ্যমতে শনিবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে আকবরশাহ থানাধীন বিশ্বকলোনি কাঁচাবাজার টাংকি পাহাড় এলাকা থেকে মো.মনির হোসেন ও খুকি বেগমকে গ্রেফতার করা হয়।
খুকি বেগমের হেফাজতে থাকা চোরাইকৃত টাকা বসতঘরের রুমে সানসিটের ওপরে পাওয়া যায়। এসময় একটি প্লাস্টিকের ব্যাগভর্তি চোরাইকৃত ২৭ লাখ টাকা ও চোরাইকাজে ব্যবহৃত ১টি রেঞ্জ উদ্ধার করা হয়।
গত বুধবার সকাল ১১টার দিকে জুবলী রোড মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক শাখার ভিতরে প্রবেশ করে কর্মকর্তারা দেখেন, ব্যাংকের দক্ষিণ পাশে জানালার লোহার গ্রিল কাটা। ব্যাংকের মধ্যে চোর ঢুকলেও কোনও মালামাল বা টাকা-পয়সা নিয়ে যায়নি। একই ভবনের ৪র্থ তলার বাংলাদেশ সাপ্লাইয়ার্স অফিসের ভিতরে অফিসের ২টি জানালার গ্রীল কাটা এবং অফিস কক্ষের ভিতর রক্ষিত লোহার সিন্ধুক ও আলমারির ড্রয়ার খোলা অবস্থায় পড়েছিল।
সিন্ধুকের ড্রয়ারের ভিতর রক্ষিত যাবতীয় মূল্যবান জিনিসপত্রসহ কাগজপত্র মেঝেতে ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় এবং ড্রয়ারে রক্ষিত ব্যবসার নগদ ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা চুরি হয়ে যায়। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা হতে ভোর ৬টার মধ্যবর্তী সময়ে এই চুরি সংঘটিত হয় বলে জানায় পুলিশ।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন বলেন, গ্রেফতার মো.মনির হোসেন একজন পেশাদার চোর। তিনি দীর্ঘ ৭ বছর ধরে চুরি পেশায় জড়িত। এসময়ে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০টি চুরি করেছেন। চুরি পেশার পাশাপাশি বিশ্বকলোনি শাপলা গ্যাসলাইন এলাকায় তার একটি ভাঙ্গারির দোকান আছে। চোরাইকৃত মালামালগুলো সে দোকানে রেখে বিক্রি করেন।