ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

বেতন বাড়িয়ে সাড়ে ৪লাখ টাকা চান চট্টগ্রাম ওয়াসার অযোগ্য এমডি ফজলুল্লাহ

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ব্যক্তিগত লাভ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফজলুল্লাহ। নন রেভিনিউ ওয়াটারের (এনআরডব্লিউ) নামে যেখানে চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে; সেখানে এটি কমিয়ে আনার পরিবর্তে বারবার কীভাবে ওয়াসার এমডি পদে পুনরায় নিয়োগ পাওয়া যায়, কীভাবে নিজের আত্মীয়-স্বজনকে ওয়াসায় চাকরি দেওয়া যায়- তা নিয়ে ব্যস্ত এই কর্মকর্তা।

পাশাপাশি নিজের বেতন বাড়ানো নিয়ে প্রচেষ্টার কমতি নেই তার। সর্বশেষ গত ৪ মে ওয়াসার ৬১তম বোর্ডে তিনি আরেক দফায় বেতন-ভাতা বাড়ানোর আবেদন করেছেন।

২০১৫ সালে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই বছরের ৯ মে এক দফায় বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা হয়। ওই সময় অনুষ্ঠিত ওয়াসার বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি বর্তমানে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। যেখানে তার মূল বেতন ধরা হয়েছে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা।

ওয়াসার বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সম্প্রতি এমডি বেতন-ভাতা বাড়ানোর আবেদন করলে বোর্ড সভায় উত্থাপন করা হয়। সভায় আবেদন মূল্যায়ন করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বোর্ড সদস্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যজিত কর্মকারকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। কমিটি প্রতিবেদন দিলে সেটি পরবর্তী বোর্ড সভায় উত্থাপন করা হবে। এরপর বোর্ড সদস্যরা অনুমোদন দিলে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলে তারপর বেতন-ভাতা বাড়বে।

.

ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কত টাকা বেতন-ভাতা বাড়ানোর আবেদন করেছেন জানতে চাইলে ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই মুহূর্তে আমার মনে নেই। আমি ওয়াসায় ফুল টাইম কাজ করি না। আপনি ওয়াসার কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জেনে নেন।

এ বিষয়ে মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও চট্টগ্রাম ওয়াসার সচিব শারমিন আলমের কাছে জানতে চাইলে বলেন, কত টাকা বেতন-ভাতা বাড়ানোর আবেদন করেছেন; সেটি রেজিস্ট্রার দেখে বলতে হবে। রেজিস্ট্রার দেখে বলার অনুরোধ জানালে তিনি আরেক দিন অন্য একদিন অফিসে গিয়ে আনার অনুরোধ জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখনও কাজ শুরু করতে পারিনি। কমিটি প্রধান অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যজিত কর্মকার পদোন্নতি পেয়ে বদলি হয়েছেন। উনার পদে যিনি আসবেন; তার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা কাজ শুরু করবো।

তবে ওয়াসার এক বোর্ড সদস্য জানিয়েছেন, ‘এবার ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফজলুল্লাহ তার মূল বেতন ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার আবেদন করেন।’

আরও খবর: দুর্নীতির মামলায় জেলখাটা ফজলুল্লাহ ৪র্থ বার ওয়াসা’র এমডি হতে চান

এক লাখ ৮০ হাজার টাকার জায়গায় এক লাফে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার এই আবেদন নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এক লাফে দেড় গুণ বেতন বাড়ানোর আবেদন নৈতিকতা পরিপন্থী বলে জানিয়েছেন ওয়াসা সংশ্লিষ্ট কয়েকজন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট নাজের হোসাইন বলেন, যখন একটি প্রতিষ্ঠান লাভে থাকে, তখন ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবি তোলা যায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর থেকে ওয়াসা লস দিয়ে আসছে। সেখানে এমডির বেতন এক লাফে দেড় গুণ বাড়ানো নৈতিকতা পরিপন্থী। কারণ ওয়াসা কিছু দিন পর পরই ক্ষতি কমিয়ে আনতে পানির দাম বাড়ায়। ভোক্তাদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করে সেটি বেতন-ভাতা হিসেবে খরচ করাটা একেবারেই অন্যায়।

তিনি আরও বলেন, একটি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন লোকসানে থাকার মানে হচ্ছে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে অযোগ্যতার পরিচয় দিচ্ছেন। এরকম একজন অযোগ্য লোক কীভাবে বারবার পুনরায় নিয়োগ পাচ্ছেন চিন্তার বিষয়। যেই লোক চাকরি জীবনে মাত্র এক মাস তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন, সেই লোক এখন ওয়াসার এমডি। নিয়োগ পাওয়ার পর তিনি সবসময় কীভাবে পুনরায় নিয়োগ পাবেন, তা নিয়ে ব্যস্ত। যে কারণে তিনি বারবার পুনরায় নিয়োগ পাচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু ওয়াসার কোনও অগ্রগতি হচ্ছে না।

ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে চট্টগ্রাম ওয়াসায় চাকরি শেষ করার পর ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পান একে এম ফজলুল্লাহ। ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি চেয়ারম্যান পদে ছিলেন।

আরও খবর: ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি পদে বিতর্কিতদের পুনঃ নিয়োগ না দেয়ার আহবান ক্যাবে’র

২০১১ সালে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ সৃজনের পর তিনি এমডি পদে এক বছরের জন্য নিয়োগ পান। এরপর আবার এক বছরের জন্য নিয়োগ পান। তারপর দুই বছর, এরপর এক বছর, আবার দুই বছর, এরপর তিন বছর এবং সর্বশেষ তিন বছরের জন্য নিয়োগ পান।

এত বছরে তিনি চট্টগ্রাম ওয়াসায় তার অন্তত ২০ জন আত্মীয়-স্বজনকে চাকরি দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে তার এক ভাগনি ও ভাগনি জামাইকে ওয়াসার সিস্টেম অ্যানালিস্ট হিসেবে চাকরি দিয়েছেন। আরও এক ভাগনি এবং ভাগনি জামাইকে মদুনাঘাট শেখ রাসেল পানি শোধনাগারে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে চাকরি দিয়েছেন। আরেক ভাগনিকে হিসাব বিভাগে অ্যাকাউন্ট সহকারী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়া আরও ১৫-১৬ জন দূরসম্পর্কের আত্মীয়-স্বজনকে ওয়াসার বিভিন্ন শাখায় চাকরি দিয়েছেন।

এদিকে নিয়োগ পাওয়ার পর এমডি যখন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও আত্মীয়-স্বজনকে চাকরি দেওয়ার চেষ্টায় আছেন, তখন গত ১১ বছরে অন্তত ৯ বার ওয়াসার পানির দাম বেড়েছে। ২০১৩ সালে এক হাজার লিটার পানির দাম ছিল ৬ দশমিক ৫৮ টাকা। এখন সে পানির দাম ৯ টাকা ৯২ পয়সা।

অন্যদিকে দীর্ঘ এই সময়ে ওয়াসার ঘাটতি ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। নন রেভিনিউ ওয়াটার (এনআরডব্লিউ) নাম দিয়ে চুরি অথবা বৈধ ব্যবহারের পরও অপচয় উল্লেখ করে ২৫-৩৩ শতাংশ সিস্টেম লস দেখানোর কারণে বছরের পর বছর ওয়াসাকে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ওয়াসায় প্রতি মাসে গড়ে নন রেভিনিউ ওয়াটার দেখানো হয় ২৫-৩৩ শতাংশ। অর্থাৎ উৎপাদিত পানির চার ভাগের এক ভাগই প্রতিদিন অপচয় করছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এতে একদিকে ওয়াসা প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে নগরীর বিশাল জনগোষ্ঠীকে পানি সরবরাহের আওতায় আনতে পারছে না। হিসাব করে দেখা যায়, নন রেভিনিউ ওয়াটার খাতেই গত বছর ৪৫ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে ওয়াসা।

এ বিষয়ে জানতে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) একেএম ফজলুল্লাহর মোবাইল নম্বরে অন্তত ১০ বার কল দিলেও রিসিভ করেননি। একাধিক এসএমএস পাঠালেও তার প্রতিউত্তর পাওয়া যায়নি।  সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন।

সর্বশেষ

০৯ নং ওয়ার্ড জাসাস কমিটি অনুমোদিত

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ৪৭ বছর ⦿বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print