চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফের সাংবাদিকদের মারধর করেছে ছাত্রলীগ। বুধবার গভীর রাতে কর্মরত কয়েকজন সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর একটি অভিযোগ পত্রও দিয়েছে চবি সাংবাদিক সমিতি।
বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল হলে মারধরের ঘটনা ঘটে। এদিকে প্রতিবাদ ও ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করে বিকেলে চবি সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) সভাপতি আবু বকর ছিদ্দিক রাহাত ও সাধারণ সম্পাদক রহমান শোয়েবসহ কর্মরত সাংবাদিকরা প্রক্টর অফিসে এ অভিযোগ পত্র দেন।
অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক। সে নগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
মারধরের শিকার সাংবাদিকরা হলেন, চবি সাংবাদিক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য ও দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের চবি প্রতিনিধি ফাহিম হাসান, আঞ্চলিক পত্রিকা দৈনিক প্রিয় চট্টগ্রামের চবি প্রতিনিধি জয় দাশ, দৈনিক বণিক বার্তার চবি প্রতিনিধি মুমিন মাসুদ ও দৈনিক আমার সংবাদের চবি প্রতিনিধি মিরাজ বাপ্পি।
মারধরের কথা স্বীকার সাংবাদিক জয় দাশ বলেন, শহর থেকে বুধবার দিবাগত রাতে আমি, মুমিন মাসুদ ও মিরাজ বাপ্পি ক্যাম্পাসে আসি। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল হলে ঢুকতে গেলে ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুকসহ একদল সন্ত্রাসী আমাদের ওপর মারধর করতে তেড়ে আসে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি চবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজনকে অবহিত করলে তিনি কোন সমস্যা হবে না বলে মুঠোফোনে জানান। পরে চবি সাংবাদিক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য ফাহিম হাসান আমাদের উদ্ধার করতে এলে সন্ত্রাসীরা তার উপরও চওড়া হয়।
তিনি আরো বলেন, ফারুক এর আগেও গত রমজান মাসে আমাকে শাটল ট্রেনে মারধর করে। তখন বিষয়টি নিয়ে সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজন তার হয়ে ক্ষমা চেয়েছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে তারা আবার আমাদের টেনে হিছড়ে গেস্ট রুমে নিতে চায়। এ সময় তারা রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালাতে চায়।
অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী জানান, আমরা এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পত্র পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও চবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজনের মোবাইল নাম্বারটি সকাল থেকেই বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে চবি সাংবাদিক সভাপতি আবু বকর ছিদ্দিক রাহাত জানান, ছাত্রলীগ নামধারী যেসব সন্ত্রাসী কিছুদিন পরপর সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কঠোর অবস্থানে যেতে বাধ্য হবে।