
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানা আব্দুল নবী ও সন্দ্বীপ উপজেলায় মো. মনিরুল আলম হত্যা মামলায় পৃথক দুটি রায়ে আদালত ২ জনকে মৃত্যুদণ্ড ১৩ জনকে যাবজ্জীবন এবং দুজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজার রায় দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দ্বিতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মুহাম্মদ আমিরুল ইসলামের আদালত পতেঙ্গা থানার আব্দুর নবী হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এতে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড, দুই আসামির যাবজ্জীবন ও চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট চন্দন দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতরা হলেন- বাদশা মিয়া (৫২) ও মহি উদ্দীন (৪১)। যাবজ্জীবন দণ্ডিতরা হলেন- আব্দুল বারেক (৬১) ও হুমায়ুন কবির (৩৮)। দণ্ডিতরা হলেন- সাইদুল হক, খায়রুল আলম, জেসমিন আক্তার ও লিপি আক্তার।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৭ মে সন্ধ্যা ৭টার সময় পতেঙ্গা থানার কাঠগড় বাজারের পাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জেরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আব্দুল নবীকে (২৬) হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোটভাই জাহিদুল আলম বাদী হয়ে ২০১৫ সালের ১৮ মে পতেঙ্গা থানায় মামলা করেন। মামলার দায়রা নম্বর ০৪/০৬। ২০০৬ সালের ১৯ মার্চ মামলার অভিযোগ গঠন হয়।
এদিকে জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার হত্যা মামলায় সাবেক চেয়ারম্যানসহ ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক একেএম মোজাম্মেল হকের আদালত এ রায় দিয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো— সাবক ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান প্রকাশ শাহিন, জামাল,আহসান উল্লাহ, আলতাফ হোসেন, মেহরাজ, আব্দুর রহমান, মান্নান, ফারুক, ফুল মিয়া, আব্দুর রহমান প্রকাশ রহমান হুজুর ও আশরাফ। এদের মধ্যে শেষের দুজন ছাড়া অন্য ৯ আসামি রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডিত আসামীরা সবাই সন্দ্বীপ ইউনিয়নের মগধরা ইউনিয়নের ষোলশহর জেলেপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবি ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট আইয়ুব খান গণমাধ্যমকে রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মো. মনিরুল আলম নামে সন্দ্বীপের একজনকে হত্যার মামলায় আদালত ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তরী মীর্জা বলেন, ‘২০১৫ সালের ৩১ জুলাই তৎকালীন শাহীন চেয়ারম্যান ও তার বাহিনী আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কুপিয়ে মনিরুল ইসলামকে হত্যা করেন। এ ঘটনার পরদিন নিহতের ভাই রবিউল আলম সমীর মেম্বার বাদী হয়ে সন্দ্বীপ থানায় ২২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযোগপত্রে ১১ জনকে বাদ দিয়ে ১১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট জমা দেয় আদালতে। এরপর মামলাটি ২০১৮ সালে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসে। সাক্ষ্যগ্রহণ এবং আসামি ও বাদী পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আজকে রায় ঘোষণা করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় প্যানাল কোডের ৩০২/৩৪ ধারায় ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকার অর্থদণ্ড দিয়েছেন। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আাদালত।’