
চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের পিলারে কোনো ফাটল নেই বলে দাবি করেছেন নকশা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান ডিজাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (ডিপিএম) কনসালটেন্টস লিমিটেডের বিশেষজ্ঞরা।
আজ বুধবার (২৭ অক্টোবর) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডিজাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (ডিপিএম) কনসালটেন্টস লিমিটেডের বিশেষজ্ঞরা পরিদর্শন শেষে এ তথ্য জানান।
ডিপিএম কনসালটেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এম এ সোবহান বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাটলের মতন যেসব ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, তা মূলত কনস্ট্রাকশন জয়েন্ট। যে জায়গাটি ফাটল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সেটি মূলত ফাটল নয়, পিলারের জোড়া। এরপরও পিলারের অভ্যন্তরে কোনো ফাটল আছে কি না তা আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে পরীক্ষা করা হবে।
তিনি বলেন, র্যাম্পটির পিলারসহ বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছি। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে সেখানে কোনো ফাটল নেই। এই অবস্থায় হালকা যান চলাচলেও কোনো বাধা নেই। তবে ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না।
আরও খবর: বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারে ফাটল: যানবাহন চলাচল বন্ধ
প্রাথমিকভাবে ফাটল খুঁজে না পাওয়ায় র্যাম্পটিতে পাঁচ টনের চেয়ে কম ওজনের যে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারবে বলেও জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।
এদিকে বিশেষজ্ঞ দল পরিদর্শনের পর কিছু লোক ফাটল দেয়া সে পিলারে সিমেন্টের প্রলেব দিয়ে ঢেকে দিতে দেখা যায়।
পরিদর্শনকালে কারিগরি বিশেষজ্ঞ দলে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আবদুস সোবহান, পরিচালক প্রকৌশলী শাহ জাহান আলম ও সিনিয়র স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার সামি মোহাম্মদ রেজা। ম্যাক্সের হয়ে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মনির হোসেন।
উল্লেখ্য গত সোমবার রাতে চট্টগ্রামে এম এ মান্নান ফ্লাইওভারের (বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার) আরাকান সড়কমুখী র্যাম্পের একটি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে- এমন ছবি ফেসবুকে ছড়ালে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দুর্ঘটনা এড়াতে সোমবার রাত থেকে র্যাম্পটিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। পরদিন মঙ্গলবার সকালে পরিদর্শনে গিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং প্রধান প্রকৌশলীও বলেছেন, নির্মাণ ত্রুটির কারণেই ফাটল ধরেছে। যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন মেয়র। তবে ফ্লাইওভারটির নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) দাবি, এটি ফাটল নয়; পিলারের জোড়া।
যানজট নিরসনে নগরের শুলকবহর থেকে বহদ্দারহাট, এক কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত এম এ মান্নান ফ্লাইওভার নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১২ সালের নভেম্বরে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার ধসে ১৪ জন নিহত হন। এর পর নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্ব পায় সেনাবাহিনী। নির্মাণকাজ শেষে ২০১৩ সালের ১২ অক্টোবর ফ্লাইওভার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর ফ্লাইওভারটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চসিককে বুঝিয়ে দেয় সিডিএ।
উদ্বোধনের পর ফ্লাইওভারটি কার্যকর না হওয়ায় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আরাকান সড়কমুখী র্যাম্প নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। ৩২৬ মিটার দীর্ঘ এবং ৬ দশমিক ৭ মিটার প্রস্থ র্যাম্পটি নির্মাণ শেষে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। র্যাম্পটিতে ১৪টি পিলার রয়েছে।