ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

চমেক ছাত্রলীগের পৈশাচিক হামলায় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে `আকিব’

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কুমিল্লার মেধাবী ছাত্র মাহাদী জে আকিব প্রকাশ আকিব হোসেন। সে স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই নিজ সংগঠন ছাত্রলীগের পৈশাচিক নগ্ন হামলার শিকার হয়ে আজ অনেকটা জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। কলেজের ৬২তম ব্যাচের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছাত্র আকিব বর্তমানে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার সকালে মাথা হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। মাথায় মারাত্মক জখম নিয়ে ভর্তি হন চমেক হাসপাতালে। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর ঠাঁই হয় আইসিইউতে। এর পর থেকে নিথর পড়ে আছেন আকিব।

তার মাথার ব্যান্ডেজে লেখা আছে ‘হাড় নেই চাপ দিবেন না’। এমন একটি ছবি আজ রবিবার ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

.

আকিব হোসেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের। তার বাড়ি কুমিল্লায়। সে এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ পেয়ে কুমিল্লা জেলা স্কুল থেকে পাশ করেছে। আর নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসিতেও গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ পেয়েছে। এরপর ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়।

আকিব হোসেন ছাত্রলীগের শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীরা তাকে মারধর করে বলে অভিযোগ রয়েছে।

.

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আকিবের ব্রেইনে মারাত্মক জখম হয়েছে। এ ক্ষত সেরে ওঠতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হতে পারে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রবিবার রাতে আকিবের জ্ঞান ফেরেনি। তবে জ্ঞান ফিরে আসলেও তার স্বাভাবিক চলাফেরা নিয়ে শঙ্কিত চিকিৎসকরা।

জানা যায়, শনিবার হামলার পর গুরুতর আহত হয়ে আকিবকে প্রথমে চমেক হাসপাতালের ওয়ানস্টপ সেন্টারে নেয়া হয়। পরবর্তীতে হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড নিউরো সার্জারিতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপর পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিমের তত্ত্বাবধানে মাথায় অস্ত্রপচার হয় আকিবের। প্রায় তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা এ অস্ত্রপচারে নেতৃত্ব দেন চমেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী।

অধ্যাপক নোমান খালেদ ছাড়াও মেডিকেল টিমে ছিলেন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরো সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আখলাক হোসেন, অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, চমেক হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হাসানুজ্জামান, কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার।

.

অধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী বলেন, অপারেশন সাকসেসফুল। তবে আকিব গুরুতরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। মাথার হাড়ে ফ্র্যাকচার হয়েছে। সাথে ব্রেইনেও গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। ইনজুরিটা খুব ভয়াবহ হওয়ায় এই মুহূর্তে কোন কমেন্ট করতে চাইনা। তবুও আমি খুবই আশাবাদী।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান জানিয়েছেন, আকিবের চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আকিবের ব্রেনে অপারেশন করতে হয়েছে। ওর ব্রেনে রক্ত জমে গিয়েছিল বিভিন্ন জায়গায়। ওই রক্তগুলো সরানো হয়েছে। সরানোর পরেও সে আউট অব ডেঞ্জার না। এজন্য তাকে আপাতত ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে।

সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আকিবের একজন সহপার্টি বলেন, কলেজের মেইন গেইটের কাছে অবস্থান করছিলেন আকিবসহ আরও কয়েকজন। হঠাৎ তারই রাজনৈতিক মতাদর্শের ছাত্রলীগের অপর একটি পক্ষ তাকে’সহ কয়েকজনকে ধাওয়া করে। সঙ্গে থাকা সবাই দ্রুত সরে যেতে পারলেও প্রতিপক্ষ আকিবকে ঘিরে ফেলে। এরপর লোহার চেইন, বোতল এবং ধারালো রামদা দিয়ে ওর মাথায় উপর্যপুরি আঘাত করে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।মাথা থেঁতলানো অবস্থায় সহপাঠীরা আকিবকে চট্টগ্রাম মেডি‌ক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে সে হাসপাতালটির আইসিইওতে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে। এখনও ফেরেনি সংজ্ঞা।

ছাত্রলীগের দুই পক্ষের এ সংঘর্ষে আকিব ছাড়াও মাহফুজুল হক (২৩), নাইমুল ইসলাম (২০) আরও দুজন আহত হন। এদের মধ্যে আকিব শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসন চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। আর মাহফুজ ও নাইমুল ইসলাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

এ ঘটনায় ১৬ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন- সাদ মোহাম্মদ গালিব (২১), আহসানুল কবির রুমন (২১), জাহিদুল ইসলাম জিসান (২১), মাহাদি বিন হাশিম (২৪), আসিফ বিন তাকি (২৫), ইমতিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী (২১), মাহতাব উদ্দিন রাফি (২১), জাহিদুল আলম জিসান (২১), সৌরভ ব্যাপারী (২১), মো. আনিস (২১), রক্তিম দে (২১), এইচ এম আসহাব উদ্দিন (২১), তানভীর ইসলাম (২১), নাজমুস সাদাত আসিফ (২১), এনামুল হাসান সীমান্ত (২১) ও রিজওয়ান আহমেদ (২১)।

এদিকে এই ঘটনার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে কলেজ প্রশাসন মেডিক‌্যাল কলেজ গতকাল শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন।

চট্টগ্রাম মেডিক‌্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার জানান, ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print