
নতুন করে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ভোক্তা পর্যায়ে ‘মারাত্মক বিরূপ্রভাব’ ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি বিশেষ করে ভোজ্যতেল, চাল, চিনি, সবজির দামের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারন মানুষের জীবনজীবিকায় নাভিশ্বাস। এর সাথে যুক্ত হয়েছে নতুন করে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি। গ্যাস, বিদ্যুৎ পানির মূল্যও দফায় দফায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। বেড়েছে ডলারের অস্বাভাবিক দামও। কয়েকদিন আগে সীমিত আয়ের মানুষের ভরসাস্থল টিসিবর পণ্যের দামও বাড়ানো হলো। এ অবস্থায় কেরোসিন এবং ডিজেলের দামবৃদ্ধি ভোক্তা পর্যায়ে ‘মারাত্মক বিরূপ্রভাব’ ফেলবে।
ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, দাম বৃদ্ধির কারণে পণ্য পরিবহন, যাতায়াত খাতে ব্যয় বৃদ্ধি থেকে শুরু করে প্রতিটি পণ্য ও সেবার দাম ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দিয়ে জনজীবনে মারাত্মক দুর্ভোগ সৃষ্ঠি করবে। নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক যন্ত্রণা থেকে সাধারণ মানুষকে রেহাই দিতে সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহর করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, আর্ন্তজাতিক বাজারে দামবৃদ্ধির অজুহাতে বাংলাদেশ জ্বালানী তেলের দাম বাড়ার ঘোষনার সাথে সাথে বাজারে নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন লেগে যাবে, হু হু করে সকল খাদ্য-পণ্য ও সেবা সার্ভিসের মুল্য বেড়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাবে। সরকার জ্বালানী খাতে ভুর্তকি হ্রাসের কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে এর প্রতিক্রিয়ায় সাধারন মানুষের জীবন জীবিকা দুর্বিসহ হয়ে উঠবে যা খুবই ভয়াবহ হতে পারে। অন্যদিকে বিগত বেশ কিছুদিন ধরে আর্ন্তজাতিক বাজারে জ্বালানী তেলের দাম কমলেও বাংলাদেশের বাজারে তার প্রতিফলন ঘটেনি। এ অবস্থায় এনার্জি রেগুলেটরী কমিশনের গণশুনানী ব্যাতিরেকে সরকারের নির্বাহী আদেশে জ্বালানী তেলের মুল্য বৃদ্ধির ঘোষনাকে হতাশাজনক বলে অবিলম্বে এ ধরনের হটকারী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য ক্রমবর্ধমান অজুহাতে বুধবার নির্বাহী আদেশে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য প্রতি লিটার ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করেছে । তবে অকটেনের দাম ৮৯ টাকা ও পেট্রোলের দাম আগের মতোই প্রতি লিটার ৮৬ টাকা থাকছে।
বিবৃতিতে এস এম নাজের হোসাইন আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে কেরোসিন এবং ডিজেল তেলের দাম কমতির দিকে ছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে এখন দাম বাড়িয়ে দিল। দাম যখন কম ছিল তখন সরকার বাংলাদেশে দাম সমন্বয় করেনি। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে এখন দাম বাড়িয়ে দিল। দাম সমন্বয় না হওয়াতে এখন বাজারে বিরুপ প্রভাব দেখা দিবে। সরকার আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে যদি নিয়মিত সমন্বয় করতো তাহলে সেটার একটা অবস্থা তৈরি হতো। এখন হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধির সুযোগ নিবে ব্যবসায়ীরা।