বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) নিতাই কুমার ভট্টাচার্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তার পূর্বের কর্মস্থল বাংলাদেশ বেতারের আঞ্চলিক পরিচালক পদে পদায়ন করা হয়েছে।
রবিবার(২৩ জানুয়ারী) রাষ্ট্রপতির আদেশ ক্রমে তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব মুহাম্মদ মকবুল হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপণে এ তথ্য জানা গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে রাতে নিতাই কুমার ভট্টাচার্য এর মুটোফোনে বার বার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রজ্ঞাপণে বলা হয়, বাংলাদেশ টেলিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার পদে প্রেষণে কর্মরত, বাংলাদেশ বেতারের আঞ্চলিক পরিচালক জনাব নিতাই কুমার ভট্টাচার্য-কে বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার পদ হতে প্রত্যাহার করে মূল পদে পদায়নের জন্য তার চাকরি বাংলাদেশ বেতারে ন্যস্ত করা হলো।
এদিকে সিটিভি শিল্পী কলাকৌশলীদের সূত্রে জানা গেছে, বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে একের পর এক জিএম বদলী হলেও এটি কোন পরিবর্তন হয়নি। স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, অনিয়ম কেন্দ্রটির আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে আছে।
জিএম নিতাই কুমারের অদক্ষতা ও অনিয়মের কারণে চট্টগ্রাম টেলিভিশন একটি হাস্যকর ও দর্শকশূন্য কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে এমন কিছু সংগীত পরিচালককে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে যাদের অনেকের শিল্পী হিসেবেও তালিকাভুক্তি নেই।’
গত বছর অক্টোবরে এসব বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ করে শিল্পীরা। ওই অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নিতাই কুমার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই নির্দিষ্ট কিছু‘দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও দালাল সিন্ডিকেট’ চট্টগ্রাম টেলিভিশন কেন্দ্রকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে। ওই সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই অনুষ্ঠান ইজারা দিয়ে সিডিউল তৈরি এবং বন্টন করা হয়। অর্থের বিনিময়ে এসব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অনুষ্ঠান বন্টন করার কারণে তালিকাভুক্তি শিল্পীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি শিল্পী সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক শিল্পী বলেন, ‘এসব অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কতটুকু সত্য জানি না। তবে তাঁর পছন্দের লোকজন দিয়ে প্রোগ্রাম করানো হচ্ছে এ কথা শতভাগ সত্য।’
অভিযোগ রয়েছে মুসলামদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর, আযাহাসহ বিভিন্ন উৎসববে মুসলিম শিল্পীদের বাধ দিয়ে অন্য ধর্মাবলম্বীদের অগ্রাধিকার দিয়ে অনুষ্ঠান করায়।
নিতাই সিন্ডিকেটের হয়রানির শিকার হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)’র বরাবরে একটি অভিযোগ করেছেন শিল্পীরা। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে এক নারী শিল্পী চট্টগ্রাম টেলিভিশন কেন্দ্রে উপস্থিত হলে অশোভন ইঙ্গিত করেন জিএম নিতাই। এছাড়াও ‘নিতাই সিন্ডিকেটের’ সদস্য সুকুমার বিশ্বাস (পিএস টু জিএম) এক শিল্পীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে উল্লেখ করেন যে,‘জিএম নিতাই ইয়াং নারীদের প্রতি দুর্বল।’
জানাগেছে, দুর্নীতি, স্বেচ্চাচারিতা শিল্পীদের অসন্তোষ ‘ অযোগ্যতা সহ নানান অভিযোগ৷ সম্প্রতি তথ্যমন্ত্রনালয থেকে ৩ দিন ব্যাপী তদন্ত হয়েছে তার বিরুদ্ধে৷ প্রাথমিক ভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জিএমএর পদ থেকে নিতাই কুমার ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
