
চট্টগ্রামে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করেছে মামলার বাদী নিহত মিতু বাবা মোশাররফ হোসেন।
আজ মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আবদুল হালিমের আদালতে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন এই নারাজি আবেদন করেন। আদালত মামলার নথিসহ শুনানির জন্য ৬ মার্চ তারিখ ঠিক করেছে। এর আগে একই দিন বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশারফ হোসেন তার করা মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দরখাস্তটি দাখিল করেন।
মোশাররফ হোসেন বলেন, পিবিআই যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে, তাতে অনেক ত্রুটি আছে। নানা ত্রুটি তুলে ধরে পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তে পাঠানোর জন্য আদালতে নারাজি আবেদন করেছি। আদালত মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৬ মার্চ তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
বাদীর আইনজীবী আহসানুল হক হেনা বলেন, বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন করা মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করা হয়েছে। মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার আগে মামলার বাদীর কোনো বক্তব্য গ্রহণ করেননি। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে নানা ধরণের ক্রুটি রয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য পাঠানোর আবেদন করা হয়েছে। আদালতে আজ প্রাথমিক শুনানি করা হয়েছে। আগামী ৬ মার্চ শুনানির জন্য তারিখ ধার্য করেছেন।
এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় তার বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে পিবিআই। পিবিআই জানায়, একই ঘটনায় বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্ত এগিয়ে নিতে মিতুর বাবা মোশাররফের মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। একই ঘটনায় দুটি মামলা চলাতে পারে না। সম্প্রতি আদালত এটিকে ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করেন। তাই আদালতের পর্যবেক্ষণ মেনে ও বিধিবিধান অনুসারে মিতুর বাবার দায়ের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বাবুলের করা মামলাটির অধিকতর তদন্ত চলবে।
আদালত সংশ্লিষ্ট জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকাল সোয়া ৭টায় নগরীর জিইসি মোড়ে মিতু খুন হন। তিনি ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে জিইসির মোড় যাচ্ছিলেন। সে সময় মোটরসাইকেলে করে তিন দুর্বৃত্ত মিতুকে ঘিরে ধরে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন। তার মামলায় গত বছরের ১২ মে পিবিআই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। সেদিন বাবুলের শ্বশুর মোশাররফ বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় বাবুলসহ ৮ জনকে অভিযুক্ত করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে বাবুলের করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৪ অক্টোবর আদালতে নারাজি দেওয়া হয়। প্রতিবেদন গ্রহণ না করে আদালত ৩ নভেম্বর মামলাটি আবারও তদন্তের আদেশ দেন। অপরদিকে বাবুলের শ্বশুরের করা মামলায়, এ বছরের ২৫ জানুয়ারি আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই।