
মুসলিম উম্মাহর শান্তি সমৃদ্ধি মঙ্গল কামনা করে আখেরী মুনাজাতের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে শেষ হলো ৩ দিনের বিশ্ব ইজতেমার আঞ্চলিক আয়োজন। শেষ দিনেও ইজতেমায় লাখ লাখ মুসমানের দল, মত নির্বিশেষে সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানে ঢল নামে। আখেরী মুনাজাতে অংশ নিতে ভোর থেকে হাটহাজারী চারিয়া ইউনিয়নের ইজতেমায় ছুটে যেতে দেখা যায় দলে দলে মানুষ। একারণে সকাল থেকে হাটহাজারী সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়
শনিবার ভোর থেকে বিভিন্ন ইসলামী চিন্তাবিধদের বয়ান শুরু হয়। তাবলীগের ৬ উসুল সম্পর্কে ও বয়ানে বক্তারা বলেন, প্রতিটি মুসলমানের উচিত দ্বীনের মেহনত খেদমত করা, দ্বীনের জন্য মেহনত চালু হয়ে গেলেই দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি আসবে। যারা দ্বীনের মেহনতের জন্য তাবলীগের কাজে নিয়োজিত হবে আল্লাহ তাআলা পরকালে তাদেরকেও শান্তির পুরষ্কার দিবেন।
বয়ান শেষে বেলা ১২টা ১৭ মিনিটে আখেরী মুনাজাত শুরু হয়। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে চলে মোনাজাত। লাখ লাখ মুসল্লির মাঝে আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন, বাংলাদেশের দাওয়াতে তাবলীগ প্রধান ও ঢাকা কাকরাইল মসজিদের খতিব আল্লামা জুবায়ের আহমেদ।

মোনাজাত শেষে লাখো মুসল্লীগণ তাদের নিজস্ব গন্তব্যে যেতে যানবাহন সংঙ্কটে পড়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হন। মোনাজাত শেষে লাখ লাখ মুসল্লী ইজতেমা ময়দান থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে স্রোতে মতো এক সাথে ফিরতে শুরু করলে এক পর্যায়ে ময়দানের চতুর দিকে বিস্তৃর্ণ এলাকা মানব বলয় সৃষ্টি হয়। জনস্রোত কারণে কোন যানবাহন চলাচল করতে না পারায় কয়েক কিলোমিটার হেটে যানবাহন ধরতে হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন লাখ লাখ মানুষ।
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এ বছর প্রথম বারের মত ২৯ ডিসেম্বর শুরু হয় ৩ দিনের বিশ্ব ইজতেমার আঞ্চলিক এ ধমীয় সমাবেশ। গতকাল জুমার নামাজে ১০ থেকে ১২ লাখ লোকের সমাবেশ ঘটলেও আজ সমাপনী দিনে অন্তত ১৪ থেকে ১৫ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নিয়েছে বলে ধারণা করেন আয়োজকরা।
ইজতেমায় দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা ছাড়াও ভারত, চীন, কাতার, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, জর্দান, মিশর, কুয়েত ও দুবাই সহ বিভিন্ন দেশের শতাধিক বিদেশি মেহমানও ইজতেমায় অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানান বিশ্ব ইজতেমা কমিটির সদস্যরা।
কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ইজতেমা শেষ হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক শামসুল আরেফিন।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা বলেন, ৩ দিনের ইজতেমায় কোন ধরণের নিরাপত্তার ক্রুটি ঘটেনি। আঞ্চলিক ইজতেমা উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ট্রাফিক, গোয়েন্দা ও সাদা পোশাকে ১৪০০ পুলিশ মোতায়েন ছিল ৩ দিন ধরে।