
চট্টগ্রামে পুলিশের গুলিতে পা হারানো পঙ্গু ছাত্রদল নেতা সাইফুল ইসলাম সাইফ (৩২) সহ ৫ জনকে থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া অন্যরা হলো-দেলোয়ার হোসেন (২১), মোহাম্মদ আবিদ (২০), মো. সাজ্জাদ (২০) ও মো. ইমরান (২৩)।
সিএমপির পাঁচলাইশ থানা পুলিশ জানায়, সোমবার (২৭ জুন) দিবাগত রাতে পাঁচলাইশ থানার রহমান নগর কে-ব্লক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ধারালো ৫টি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজিম উদ্দিন মজুমদার জানান, নাশকতার পরিকল্পনাকালে গোপন সংবাদের ভিক্তিতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রশস্ত্রসহ রাত ১২টায় দিকে নগর ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক বার্মা সাইফুলসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে মহানগর বিএনপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পুলিশের গুলিতে পঙ্গুত্ব বরণকারী চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সাইফ সহ ৫ জন ছাত্রদল নেতা গতকাল সোমবার (২৭ জুন) চট্টগ্রাম আদালতে হাজিরা দিতে গেলে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ বিকাল সাড়ে চারটায় সোনালী ব্যাংকের সামনে থেকে তাদের তুলে নিয়ে গিয়ে নতুন অস্ত্র মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে। এ অমানবিক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রামের বিএনপি নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মীর মো. নাছির উদ্দীন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বেগম রোজী কবির, গোলাম আকবর খন্দকার, এস এম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান ও সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খান বলেন, এই ঘটনা আতঙ্কজনক। ছাত্রদল নেতা সাইফুল ইসলাম সাইফকে এভাবে গ্রেফতার করে কারাগার পাঠানো নির্মম মনুষ্যত্বহীনতা এবং ভয়ানক অশুভ সঙ্কেত। এর আগেও তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পুলিশ উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে, তাতে সাইফুল ইসলাম সাইফ চিরতরে পঙ্গু হয়ে যায়। আবারো তাকে একই কায়দায় আটক গভীর উদ্বেগজনক। রাষ্ট্র পরিচালনার সকল ক্ষেত্রে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে এবং ভয়াবহ আওয়ামী দুঃশাসন টিকিয়ে রাখতেই সরকার এখন আরও হিংস্র রূপ ধারণ করেছে। শুধুমাত্র বিরোধী দলকে দমন করার জন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন নিপীড়ন করা হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সাইফুল সহ অন্য ৪ জন ছাত্রদল নেতার কোন মামলায় ওয়ারেন্ট না থাকার পরও পাঁচলাইশ থানা পলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে তাদেরকে অস্ত্র মামলায় কারাগারে প্রেরণ করেছে। পুলিশ আদালত এলাকা থেকে তুলে নিয়ে অস্ত্র দিয়ে চালান দিয়ে উল্টো তাদেরকে সন্ত্রাসী হিসাবে প্রচার করছে। সাইফুল ছাত্রদলের বলিষ্ঠ নেতা, তাই তাকে দমানোর জন্যই এই গ্রেফতারের ঘটনা ঘটিয়েছে। সাইফুল সব মামলায় জামিনে আছে এবং তার মামলাগুলো সব রাজনৈতিক মামলা। এভাবে নিরাপরাধ ছাত্রদল নেতাদের গ্রেফতার ও অস্ত্র দিয়ে চালান দেওয়া প্রশাসনের জঘন্য ঘটনা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশ আজ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। খুন গুম হত্যা নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। এদেশে আজ কারো জীবন নিরাপদ নয়। বিরোধী দলের নিরাপরাধ মানুষ গুলোকে ধরে নিয়ে প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। পুলিশ আজ বেপরোয়া। মানুষ আজ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত। আদালতে বিচার নেই। সর্বক্ষেত্রে প্রেসক্রিপশনের মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালিত হচ্ছে। পুলিশের গুলিতে পঙ্গু সাইফুলসহ ৫ জন ছাত্রদল নেতাকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার তারই ধারাবাহিকতা।
নেতৃবৃন্দ এ ধরনের অমানবিক ও জগন্য ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। অবিলম্বে সাইফুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, মো. আবিদ, মো. সাজ্জাদ ও ইমরান হোসেনের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তির দাবী জানান।