
শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে অবৈধভাবে ছাড়িয়ে নেয়া ২৭ কোটি টাকার রোলস রয়েস ব্র্যান্ডের একটি বিলাসবহুল গাড়ি রাজধানীর বারিধারা এলাকা থেকে জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দার কর্মকর্তারা।
গত সোমবার (৪ জুলাই) রাজধানীর বারিধারার জাজ ইনটিনুটস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের এমডির নিজ বাসভবনের গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হলেও আজ বুধবার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তারা জানান, গত ২৭ এপ্রিল বিলাসবহুল গাড়িটি চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করে জাজ ইনটিনুটস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আমদানির পর থেকে গত ৪ জুলাই পর্যন্ত গাড়িটির কোন শুল্ক পরিশোধ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। এই সময়ের মধ্যে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ২৪ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করেছে। গাড়িটি কৌশলে বন্দর থেকে বের করার পর প্রথমে কয়েকদিন চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকায় লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।
কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ইপিজেডের হংকং ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস লিমিটেড গাড়িটি শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করে। ২৭ কোটি টাকা মূল্যের আমদানিকৃত গাড়িটি দীর্ঘদিন যাবৎ এসেসমেন্ট করা হয়নি। গাড়িটির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহকালে দেখা গেছে গাড়িটি চট্টগ্রাম বন্দর হতে ইপিজেডের সামনে স্কট করে নিয়ে যাওয়া হলেও কোন শুল্ক প্রতিষ্ঠান করা হয়নি। গত এপ্রিলে গাড়িটি আমদানির পর চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ (ইপিজেড) এলাকায় নেওয়া হয়। এরপর শুল্কায়নের জন্য কাগজপত্র দাখিল করা হয় কাস্টম হাউসে। তবে শুল্কায়নের আগেই গত ১৭ মে গাড়িটির প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ঢাকার বারিধারায় বাসায় সরিয়ে নেওয়া হয়। এ খবর জানতে পেরে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর প্রথমে চট্টগ্রাম ইপিজেডে অভিযান চালায়। এরপর নিশ্চিত হয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক শামসুল আরেফিন খানের নেতৃত্বে বারিধারায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বাসার গ্যারেজে অভিযান চালানো হয়। ৪ জুলাই ওই বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করেন তারা।
শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক শামসুল আরেফিন খান বলেন, ‘ঢাকা থেকে আটক করা বিলাসবহুল গাড়িটির বনেটে থাকা স্টিকারে দেখা গেছে এটি ৬৭৫০ সিসির গাড়ি। আমাদের কাস্টমস আইন মোতাবেক ২০০০ সিসি পর্যন্ত আমদানি গাড়ির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রযোজ্য হবে। কিন্তু আমরা যে গাড়িটি আটক করেছি সেটি ২০০০ সিসির বেশি হওয়ায় শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রাপ্য হবে না। আমাদের হিসাব মতে আমদানিকারক প্রায় ২৪ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করেছে। তবুও এসআরও অনুযায়ী গাড়িটি শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি কি কারণে গাড়িটির শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়নি, সে বিষয়ে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান আছে।