
চট্টগ্রাম মহানগরীর লালখান বাজার এলালকায় চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন ও একজনের মাথার চুল কেটে দেয়ার ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
গত শুক্রবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে এ ঘটনার পর রবিবার (২১ আগস্ট) শিশুদের নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাটি সামনে আসে। পরে রবিবার রাতে অভিযুক্ত ৩ পুলিশকে প্রত্যাহার হয়।
তারা হলেন, পুলিশ কনস্টেবল মো. মেহেদী, মো. মাজহার ও মো. এহসান। তিনজনই চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মনসুরাবাদ লাইনে থাকেন এবং নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তার জন্য টহল পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) শাহাদাত হুসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে ৩ পুলিশ সদস্যকে তাদের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নগরীর লালখান বাজার ম্যাজিস্ট্রেট কলোনি, মতিঝর্ণা ও এর আশেপাশের এলাকায় মাঝে মধ্যেই চুরির ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন ওই এলাকায় টহল পুলিশের কাছে খবর আসে, লালখান বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ব্রিজের নিচে বসে কয়েকজন শিশু আড্ডা দিচ্ছে এবং তারা প্রায়ই ওই এলাকায় চুরি করে থাকে। ওই খবরের ভিত্তিতে পুলিশ শিশুদের ধাওয়া করলে তিন শিশুর মধ্যে একজন পালিয়ে যায়। টহল পুলিশ দুই শিশুকে ধরে ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির পিছনে জিলাপির পাহাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে একটি লোহার খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে তাদের বেঁধে রাখা হয় এবং একজনের মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়।
জানা যায়, ১৩ বছর বয়সী ওই দুই শিশু নগরীর লালখান বাজার মতিঝর্ণা এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকে। তাদের একজন সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী, আরেকজন কিছু করে না। তাদের পরিবারের দাবি, তাদের ছেলে কোনো দিন চুরি করেনি। চুরি করেছে বলে পুলিশ ছেলেদের নির্যাতন করেছে। মাথার চুলও কেটে দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে ছেলে ভয়ে বাসায় থাকছে না।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ঘটনার দিন আমি ছুটিতে ছিলাম। পরে ঘটনাটি আমি জানতে পারি। ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির এক গার্ডের দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে টহল পুলিশ ওই দুই শিশুকে ধরে। পরে তাদের বেঁধে রাখে তারা। এ সময় মোবাইলে চার্জ না থাকায় থানায় বিষয়টি জানাতে পারেনি তারা। তবে দুইজনই শিশু বলে তাদের অভিভাবককে ডেকে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় একজনের চুল বড় থাকায় তার অভিভাবকের কাছে চুল ছোট করে দেওয়ার অনুরোধও করে পুলিশ সদস্যরা।