ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

রাঙামাটির দূর্গম পাহাড়ে উপজাতি ছাত্রীকে গণধর্ষণ!

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি:
রাঙামাটিতে এক কলেজছাত্রী সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে এলাকায় যাওয়ার পরে পূর্বের ধর্ষণের ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে পুনরায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনার বিচার চেয়ে রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছে ভূক্তভোগী পাহাড়ি ওই কলেজ ছাত্রী।

রাঙামাটি জেলাধীন বিলাইছড়ি উপজেলার দূর্গম ফারুয়া ইউনিয়নে নিজ বাড়ির পাশের এগুইজ্জ্যাছড়ি এলাকায় উক্ত কলেজ শিক্ষার্থী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে।

ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আসামিরা হলেন-অঞ্জন তঞ্চঙ্গ্যা ওরফে এজেন্ট (৩০), রুজন দাশ (২৪), সুমন্ত চাকমা (২৫), স্মেহাশীষ বড়ুয়া (২৪) ও সুজন দাশ (২৮)। আসামিরা সকলেই উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়নের ফারুয়া বাজারের বাসিন্দা।

আসামীরা সকলেই স্থানীয় আঞ্চলিকদলের সশস্ত্র গ্রুপের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ায় ভিকটিম ও তার পরিবারকে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে কোণঠাষা করে রেখেছিলো বলে জানাগেছে।

আদালত সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর এবং আবারও ধর্ষণে বাধ্য হওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ ও হত্যার হুমকির পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে বিলাইছড়ি থানাকে অবহিত করে। কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না নেওয়ায় উক্ত কিশোরী রাঙামাটি এসে বিনামূল্যে আইনী সহযোগিত দেওয়া লিগ্যাল এইড অফিসে অভিযোগ করে।

পরে লিগ্যাল এইড কর্তৃপক্ষ উক্ত ভিকটিমের পক্ষে প্যানেল আইনজীবি নিয়োগ করে রাঙামাটিস্থ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা ফাইলিং করে। ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ ই এম ইসমাইল হোসেন অভিযোগটি আমলে নিয়ে বিলাইছড়ি থানার ওসিকে এজাহারগ্রহণ ও মামলাটি তদন্তের আদেশ দিয়েছেন বলে প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এর পিপি অ্যাডভোকেট মো: সাইফুল ইসলাম অভি। তিনি জানান, লিগ্যাল এইড এর প্যানেল আইনজীবি অ্যাডভোকেট সালিমা ওয়াহিদা জেনী ভিকটিমের পক্ষে উক্ত মামলাটি আদালতে দায়ের করেন।

ভিকিটিমের আইনজীবি অ্যাডভোকেট সালিমা ওয়াহিদা জেনি প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, ঘটনার পর চিকিৎসা নেওয়ার পর মেয়েটি গত মাস খানেক আগে রাঙামাটি আদালতস্থ আইনজীবি ভবনে আমার চেম্বারে আসে। কিন্তু সে মানসিকভাবে অত্যন্ত দূর্বল এবং আতঙ্কগ্রস্থ অবস্থায় ছিলো। তাকে আমরা বিভিন্নভাবে কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে কিছুটা আত্ম প্রত্যয়ী করে তুলি। এরপর তার সার্বিক বিষয়টি পর্যালোচনা করে লিগ্যাল এইড এ অভিযোগ দাখিল করি। পরবর্তীতে লিগ্যাল এইডের নির্দেশনায় আমি মঙ্গলবার ৩০শে আগষ্ট রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এ এই মামলার ফাইলিং করেছি। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে বিলাইছড়ি থানাকে মামলা নিতে এবং তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিল করতে নির্দেশনা প্রদান করেন।

আগামী ০৮/০৯/২০২২ইং তারিখে এই মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছেন আদালত। তিনি জানান, মূলত: ‘গণধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রীকে ঘটনার পর থানায় মামলা না করতে চাপ প্রয়োগ এবং ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে বলে হুমকি দেয় আসামিরা। পরবর্তীতে আসামিরা কলেজছাত্রীকে ভিডিও প্রকাশ করে দেবে; এমন হুমকি দিয়ে আবারও একইভাবে ধর্ষণে বাধ্য করতে থাকে। পরে নিরূপায় কলেজছাত্রীটি আমাদেরকাছে আসে এবং লিগ্যাল এইড এর সার্বিক সহযোগিতায় আদালতে মামলা দায়ের করেছে।

এদিকে কলেজছাত্রীর অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিলাইছড়ি থানার ওসি মোহাম্মদ আলমগীর জানান, মামলার না নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। ঘটনার অনেক পরে স্থানীয় এক হেডম্যান অভিযোগটি দিতে এসেছেন। আমি উনাকে বলেছি, ভিকটিম যেহেতু রাঙ্গামাটি শহরে থাকেন সেক্ষেত্রে আদালতে মামলা করতে পারেন কিংবা বিলাইছড়ি থানাতেও মামলা করা যাবে। তবে ভিকটিম ও তার পরিবারকে অবশ্যই আসতে হবে।’

মামলায় উল্লেখ করা তথ্যানুসারে জানা গিয়েছে, গত ১৩ এপ্রিল রাত ৯টায় মামলার বাদী কলেজছাত্রী তাঁর স্থানীয় এক বন্ধুর বাসায় বিঝুর (বৈশাখী উৎসব) দাওয়াত খেয়ে নিজের বাসার বাহিরে বের হলে অভিযুক্ত ৫ আসামি ভয়ভীতি দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধরে নিয়ে জোরপূর্বক এগুজ্যাছড়ি ফরেস্ট অফিসের কালভার্ট ব্রিজের নিচে কলেজছাত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে। কৌতুহল বশত: কলেজছাত্রীর বন্ধু তাদের অনুসরণ করে ঘটনাস্থলের দিকে আসেন। পরে কলেজছাত্রী চিৎকার করলে তার বন্ধু এগিয়ে আসেন এবং আসামিদের কলেজছাত্রীর কোন ক্ষতি না করার অনুরোধ করলে তারা ওই বন্ধুকেও কলেজছাত্রীর ওড়না দিয়ে বেঁধে রেখে কলেজছাত্রীকে মারধর ও পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় ৩ নম্বর আসামি সুমন্ত চাকমা ধর্ষণের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে ১ ও ২ নম্বর আসামি বিষয়টি কাউকে জানালে বা মামলা করলে বাদী ও তার পিতাকে হত্যা এবং ধর্ষণের ভিডিও অনলাইনে ছেড়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। পরে ওই কিশোরী চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালের ‘ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে’ চিকিৎসা নেন। হাসপাতালের ছাড়পত্রেও ‘গ্যাং রেফ’ এর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার পর ২৩ জুন ৩, ৪ ও ৫ নম্বর আসামি আবারও ধর্ষণের হুমকি দেন। ২৮জুন কলেজছাত্রী বিলাইছড়ি থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা নিতে চায় না। পরে ১২ আগস্ট আত্মহত্যার চেষ্টা করেন কলেজছাত্রী।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) রাঙ্গামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে হাজির করে কলেজছাত্রীর মামলার আবেদন জানায়।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print