
চিকা মারাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক উপগ্রুপের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী। ভাঙচুর করা হয়েছে আবাসিক হলের ১০টি কক্ষ।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে চবির এফ রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীরা জানান, চবির হলগুলো দখল করে রেখেছে ছাত্রলীগের ১১টি গ্রুপ। দীর্ঘদিন ধরে এ.এফ রহমান হলে আধিপত্য বিস্তার করে আছে বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা। পুরো হলের দেওয়ালজুড়ে ‘বিজয়’ লেখাটি চিকা মারা ছিল। ওই হলে থাকা ভিএক্স গ্রুপের নেতাকর্মীরা শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে বিজয় লেখা মুছে নিজেদের গ্রুপের নাম লিখতে যান। এ ঘটনা নিয়ে সকালে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে রাত ৯টার দিকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে বিজয়ের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা ও রামদা নিয়ে এ.এফ রহমান হলের সামনে ও ভিএক্সের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে অবস্থান নেন। এরপর রাত ১০টার দিকে ভিএক্সের নেতাকর্মীরা ধাওয়া দিয়ে এ.এফ রহমান হল দখলে নেন। সংঘর্ষ শুরু হলে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় বিবাদে জড়ানো উভয়পক্ষ। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল।
পরে মধ্যরাতে পুলিশ গিয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। মারধরে আহত নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
চবির সহকারী প্রক্টর এসএএম জিয়াউল ইসলাম বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে আছি। অতিরিক্ত পুলিশ আসছে। পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছি।
রাতে চবি চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক খোন্দকার মোহাম্মদ আতাউল গণি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৮ জন চিকিৎসা নিতে এসেছেন। কারও মাথা ফেঁটেছে। কারও হাত, পা, কোমরসহ বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
এ বিষয়ে বিজয়ের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ‘এ.এফ রহমান হলের দেওয়ালে দীর্ঘদিন ধরে বিজয়ের নাম লেখা। কোনো কারণ ছাড়া ভিএক্সের গ্রুপের নেতাকর্মীরা এই চিকার ওপর চিকা মেরেছে। এ ঘটনা পুরোটা পরিকল্পিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়ার নির্দেশে ভিএক্সের নেতাকর্মীরা এই কাজ করেছে ও হামলাও করেছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভিএক্স উপপক্ষের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘বিজয়ের নেতাকর্মীরাই ইচ্ছে করে তাদের চিকা মুছে দিয়েছে। তাদের চিকা নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। বিজয়ের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার জন্য চিকা মুছে ঝামেলা করতে চেয়েছে। তারা এটি প্রতিহত করেছেন।’